নরম ক্ষমতা এবং কঠিন ক্ষমতার মধ্যে পার্থক্যটি সহজে বোঝা যায় নামের পার্থক্য থেকে| অভিধানগত দিক থেকে বিচার করলে দেখা যায় যে, আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে নরম ক্ষমতা এবং কঠিন ক্ষমতা উভয়ই দুটি গুরুত্বপূর্ণ দিক আছে| আমরা ক্ষমতা বা power শব্দটির সাথে পরিচিত এবং আমরা ক্ষমতা বলতে বুঝি, এর শক্তি অথবা প্রয়োগের নিয়ন্ত্রণকে|
কঠিন ক্ষমতা এবং নরম ক্ষমতা হলো দুই ধরনের বৈদেশিক নীতি যা রাষ্ট্রগুলি তাদের মধ্যেকার সম্পর্কের ক্ষেত্রে ব্যবহার করে| একদিকে কঠিন ক্ষমতা বলতে বোঝায়, কঠিন অথবা শক্তিশালী ক্ষমতা প্রয়োগ করাকে বা বলপ্রয়োগ করাকে, যেমন- সামরিক ক্ষমতার প্রয়োগ অথবা অর্থনৈতিক ক্ষমতা প্রয়োগের কথা উল্লেখ করা যায়| অন্যদিকে নরম ক্ষমতা হলো, অনেকটা সূক্ষ্ম বা নরম|
কঠিন ক্ষমতা এবং নরম ক্ষমতা হলো দুই ধরনের বৈদেশিক নীতি যা রাষ্ট্রগুলি তাদের মধ্যেকার সম্পর্কের ক্ষেত্রে ব্যবহার করে| একদিকে কঠিন ক্ষমতা বলতে বোঝায়, কঠিন অথবা শক্তিশালী ক্ষমতা প্রয়োগ করাকে বা বলপ্রয়োগ করাকে, যেমন- সামরিক ক্ষমতার প্রয়োগ অথবা অর্থনৈতিক ক্ষমতা প্রয়োগের কথা উল্লেখ করা যায়| অন্যদিকে নরম ক্ষমতা হলো, অনেকটা সূক্ষ্ম বা নরম|
soft power and Hard power power |
কঠিন ক্ষমতা বা Hard power
কঠিন ক্ষমতা হলো একধরনের দমনমূলক আন্তর্জাতিক ক্ষমতা| এই ক্ষমতা সামরিক শক্তির ব্যবহার এবং অর্থনৈতিক ক্ষমতা প্রবাহিত করতে এবং নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যবহৃত হয়| সেই কারণে যে রাষ্ট্র সামরিক দিক থেকে এবং অর্থনৈতিক দিক থেকে শক্তিশালী, তারা অর্থনৈতিক দিক থেকে এবং সামরিক দিক থেকে যারা কম শক্তিশালী তাদেরকে নিয়ন্ত্রণ করে|
জোসেফ নাই কঠিন ক্ষমতা বলতে বুঝিয়েছেন, "যারা অর্থনৈতিক এবং সামরিক দিক থেকে ক্ষমতাশালী, তারা এই ক্ষমতার প্রয়োগের মাধ্যমে অন্যান্যদেরকে তাদের কথা মানতে বাধ্য করে"| এর অর্থ হল যে, শক্তিশালী দেশগুলি দুর্বল দেশগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করে এবং তাদের ওপর নানা প্রকার বাণিজ্যিক বিধি-নিষেধ আরোপ করে অথবা সামরিক নিরাপত্তা প্রদান করে অথবা তাদের বিভিন্ন প্রয়োজন মিটিয়ে| এছাড়া অনেক সময়তে ভীতি প্রদর্শনকে এবং বল প্রয়োগকে আশ্রয় করা হয়|
কঠিন ক্ষমতা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হল দমন| সুতরাং কঠিন ক্ষমতা প্রয়োগের মূল উদ্দেশ্য হলো, দুর্বল রাষ্ট্রগুলিকে তাদের নিজের ইচ্ছামত পরিচালনা করা| একটা দেশের পরিচয় হলো, তার আকৃতি, ক্ষমতা এবং সম্পদের ব্যবহার| এছাড়া জনসংখ্যা, প্রাকৃতিক সম্পদ, আঞ্চলিক বিষয়, সেনাবাহিনী, অর্থনৈতিক ক্ষমতা প্রভৃতিও এর সঙ্গে যুক্ত| একটা জাতির কঠিন ক্ষমতার প্রয়োগ প্রকাশ পায় তার সম্পদের ব্যবহারের মধ্য দিয়ে|
কঠিন ক্ষমতাকে ব্যবহারের উদাহরণ হল, 1979 সালে সোভিয়েত রাশিয়া আফগানিস্তান আক্রমণ অথবা 2003 সালের ইরাক আক্রমণের ঘটনা| একটি রাষ্ট্রের নিজের উদ্দেশ্য পূরণের জন্য সম্মিলিত রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার প্রয়োগ ঘটায়| এর সবচেয়ে বড় উদাহরণ হল, বিংশ শতকে ইরান, কিউবা এবং ইরাকের উপর আমেরিকার ক্ষমতা প্রয়োগ|
সুতরাং আমরা বলতে পারি যে, কঠিন ক্ষমতা হলো শক্তিশালী রাষ্ট্র সমূহের দ্বারা ব্যবহৃত একটা বৈদেশিক ক্ষমতা প্রয়োগের যন্ত্রকে| সুতরাং একটা কথা বলা যেতে পারে, রাষ্ট্রসমূহ তার কঠিন ক্ষমতার প্রয়োগ ঘটায় সামরিক ক্ষমতা প্রয়োগের দ্বারা, যেমন-দমনমূলক কূটনীতি, সেনাবাহিনী হস্তক্ষেপ এবং অর্থনৈতিক বিধি-নিষেধের আরোপ এবং বাণিজ্যিক বেড়াজাল স্থাপন দ্বারা|
.......................................
জোসেফ নাই কঠিন ক্ষমতা বলতে বুঝিয়েছেন, "যারা অর্থনৈতিক এবং সামরিক দিক থেকে ক্ষমতাশালী, তারা এই ক্ষমতার প্রয়োগের মাধ্যমে অন্যান্যদেরকে তাদের কথা মানতে বাধ্য করে"| এর অর্থ হল যে, শক্তিশালী দেশগুলি দুর্বল দেশগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করে এবং তাদের ওপর নানা প্রকার বাণিজ্যিক বিধি-নিষেধ আরোপ করে অথবা সামরিক নিরাপত্তা প্রদান করে অথবা তাদের বিভিন্ন প্রয়োজন মিটিয়ে| এছাড়া অনেক সময়তে ভীতি প্রদর্শনকে এবং বল প্রয়োগকে আশ্রয় করা হয়|
কঠিন ক্ষমতা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হল দমন| সুতরাং কঠিন ক্ষমতা প্রয়োগের মূল উদ্দেশ্য হলো, দুর্বল রাষ্ট্রগুলিকে তাদের নিজের ইচ্ছামত পরিচালনা করা| একটা দেশের পরিচয় হলো, তার আকৃতি, ক্ষমতা এবং সম্পদের ব্যবহার| এছাড়া জনসংখ্যা, প্রাকৃতিক সম্পদ, আঞ্চলিক বিষয়, সেনাবাহিনী, অর্থনৈতিক ক্ষমতা প্রভৃতিও এর সঙ্গে যুক্ত| একটা জাতির কঠিন ক্ষমতার প্রয়োগ প্রকাশ পায় তার সম্পদের ব্যবহারের মধ্য দিয়ে|
কঠিন ক্ষমতাকে ব্যবহারের উদাহরণ হল, 1979 সালে সোভিয়েত রাশিয়া আফগানিস্তান আক্রমণ অথবা 2003 সালের ইরাক আক্রমণের ঘটনা| একটি রাষ্ট্রের নিজের উদ্দেশ্য পূরণের জন্য সম্মিলিত রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার প্রয়োগ ঘটায়| এর সবচেয়ে বড় উদাহরণ হল, বিংশ শতকে ইরান, কিউবা এবং ইরাকের উপর আমেরিকার ক্ষমতা প্রয়োগ|
সুতরাং আমরা বলতে পারি যে, কঠিন ক্ষমতা হলো শক্তিশালী রাষ্ট্র সমূহের দ্বারা ব্যবহৃত একটা বৈদেশিক ক্ষমতা প্রয়োগের যন্ত্রকে| সুতরাং একটা কথা বলা যেতে পারে, রাষ্ট্রসমূহ তার কঠিন ক্ষমতার প্রয়োগ ঘটায় সামরিক ক্ষমতা প্রয়োগের দ্বারা, যেমন-দমনমূলক কূটনীতি, সেনাবাহিনী হস্তক্ষেপ এবং অর্থনৈতিক বিধি-নিষেধের আরোপ এবং বাণিজ্যিক বেড়াজাল স্থাপন দ্বারা|
নরম ক্ষমতা বা soft power
নরম ক্ষমতা বা soft power শব্দটির প্রবক্তা হলেন জসেফ নাই| নরম ক্ষমতা হলো ক্ষমতার একটি সুক্ষ্ম রূপ| এই ক্ষমতাকে মূলত ব্যবহার করা হয় আন্তর্জাতিক-রাজনৈতিক সম্পর্ক, জাতির সাংস্কৃতিক, কূটনৈতিক প্রভাব বিস্তারের ক্ষেত্রে|
নাই-এর মতে, নরম ক্ষমতা হলো দমনমূলক ক্ষমতার পরিবর্তন ক্ষমতার একটি আকর্ষণীয় এবং সহনীয় রূপ| নরম ক্ষমতা কঠিন ক্ষমতার মতো শক্তি অথবা দমনমূলক বিষয়ের উপর নির্ভরশীল নয়| আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলি নরম ক্ষমতার প্রয়োগ করে তাদের নিজেদের পছন্দকে প্রতিষ্ঠা করে, অন্যদের পছন্দ বা ইচ্ছাকে দমন না করে| নাই-এর মতে ব্যাখ্যা অনুসারে, একটি জাতির নরম ক্ষমতা 3 টি বিষয়ের উপর নির্ভর করে| যেমন-
নাই-এর মতে, নরম ক্ষমতা হলো দমনমূলক ক্ষমতার পরিবর্তন ক্ষমতার একটি আকর্ষণীয় এবং সহনীয় রূপ| নরম ক্ষমতা কঠিন ক্ষমতার মতো শক্তি অথবা দমনমূলক বিষয়ের উপর নির্ভরশীল নয়| আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলি নরম ক্ষমতার প্রয়োগ করে তাদের নিজেদের পছন্দকে প্রতিষ্ঠা করে, অন্যদের পছন্দ বা ইচ্ছাকে দমন না করে| নাই-এর মতে ব্যাখ্যা অনুসারে, একটি জাতির নরম ক্ষমতা 3 টি বিষয়ের উপর নির্ভর করে| যেমন-
- সংস্কৃতিক
- রাজনৈতিক মূল্যবোধ
- বৈদেশিক রাজনৈতিক
নরম ক্ষমতা এবং কঠিন ক্ষমতার মধ্যে তুলনা করতে গেলে বলা যায় যে, নরম ক্ষমতাকে খুব দ্রুত চিহ্নিত করা যায়| তবে মনে রাখতে হবে যে, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ে উভয়ই ক্ষমতায় গুরুত্বপূর্ণ এবং রাষ্ট্রসমূহ উভয় রুপ ক্ষমতাকে ব্যবহার করে প্রকৃতি এবং কাজের ধরন অনুযায়ী|
কঠিন ক্ষমতা উপস্থাপিত করে দমনমূলক আগ্রাসনকে এবং নির্ভর করে সামরিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতার উপরে| কঠিন ক্ষমতা আসলে ব্যবহৃত হয় দুর্বল রাষ্ট্রগুলির উপরে শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলির দ্বারা প্রভাব বিস্তারে জন্য|
অন্যদিকে নরম ক্ষমতা হলো একেবারে বিপরীত ধর্মী, যা বিভিন্ন রাষ্ট্রের মধ্যে বৈদেশিক সম্পর্ক স্থাপনের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়| রাষ্ট্রগুলি নরম ক্ষমতাকে ব্যবহার করে পারস্পরিক সহযোগিতা এবং সহাবস্থানের ক্ষেত্রে| নরম ক্ষমতা রাষ্ট্রসমূহের পছন্দ এবং স্বার্থের উপরে গুরুত্ব দেয়| এই ক্ষমতার প্রয়োগ ঘটে সাংস্কৃতিক, ইতিহাস, ঐতিহাসিক এবং কূটনৈতিক ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে|
কঠিন ক্ষমতা হলো আগ্রাসন এবং নরম ক্ষমতা হলো সহযোগিতা এবং সহাবস্থান| কঠিন ক্ষমতার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হলো সামরিক হস্তক্ষেপ, অর্থনৈতিক অনুমোদন, বাণিজ্যিক বাধা নিষেধের ক্ষেত্রে ছাড় প্রভৃতি| অন্যদিকে নরম ক্ষমতার অন্তর্ভুক্ত হলো সংস্কৃতি, ইতিহাস এবং কূটনৈতিক প্রভাব|
কঠিন ক্ষমতা উপস্থাপিত করে দমনমূলক আগ্রাসনকে এবং নির্ভর করে সামরিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতার উপরে| কঠিন ক্ষমতা আসলে ব্যবহৃত হয় দুর্বল রাষ্ট্রগুলির উপরে শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলির দ্বারা প্রভাব বিস্তারে জন্য|
অন্যদিকে নরম ক্ষমতা হলো একেবারে বিপরীত ধর্মী, যা বিভিন্ন রাষ্ট্রের মধ্যে বৈদেশিক সম্পর্ক স্থাপনের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়| রাষ্ট্রগুলি নরম ক্ষমতাকে ব্যবহার করে পারস্পরিক সহযোগিতা এবং সহাবস্থানের ক্ষেত্রে| নরম ক্ষমতা রাষ্ট্রসমূহের পছন্দ এবং স্বার্থের উপরে গুরুত্ব দেয়| এই ক্ষমতার প্রয়োগ ঘটে সাংস্কৃতিক, ইতিহাস, ঐতিহাসিক এবং কূটনৈতিক ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে|
কঠিন ক্ষমতা হলো আগ্রাসন এবং নরম ক্ষমতা হলো সহযোগিতা এবং সহাবস্থান| কঠিন ক্ষমতার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হলো সামরিক হস্তক্ষেপ, অর্থনৈতিক অনুমোদন, বাণিজ্যিক বাধা নিষেধের ক্ষেত্রে ছাড় প্রভৃতি| অন্যদিকে নরম ক্ষমতার অন্তর্ভুক্ত হলো সংস্কৃতি, ইতিহাস এবং কূটনৈতিক প্রভাব|
তথ্যসূত্র
- Prakash Chandra, "international relations & comparative politics"
- Garrett W Brown, "The Concise Oxford Dictionary of Politics and International Relations "
- C. Delisle Burns, "International Politics "
সম্পর্কিত বিষয়
- দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী সময় উপনিবেশবাদের পতন তথা এর গুরুত্ব (আরো পড়ুন)
- দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে জার্মানির বিভাজন তথা বিশ্ব রাজনীতিতে তার প্রভাব (আরো পড়ুন)
- ইতালিতে ফ্যাসিবাদের উত্থানের কারণ (আরো পড়ুন)
সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ| আশাকরি আমাদের এই পোস্টটি আপনার ভালো লাগলো| আপনার যদি এই পোস্টটি সম্বন্ধে কোন প্রশ্ন থাকে, তাহলে নিচে কমেন্টের মাধ্যমে আমাদেরকে জানাতে পারেন এবং অবশ্যই পোস্টটি শেয়ার করে অপরকে জানতে সাহায্য করুন|