1618 থেকে 1648 খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত রোমান ক্যাথলিকদের সঙ্গে প্রোটেস্ট্যান্টদের যে 30 বছর ব্যাপী যুদ্ধ চলেছিল, তার অবসান ঘটেছিল "ওয়েস্টফেলিয়া শান্তি চুক্তি" দ্বারা|
1647 খ্রিস্টাব্দে 24 শে অক্টোবর স্বাক্ষরিত এই শান্তি চুক্তির প্রধান শর্তগুলো ছিল-
গির্জা |
1647 খ্রিস্টাব্দে 24 শে অক্টোবর স্বাক্ষরিত এই শান্তি চুক্তির প্রধান শর্তগুলো ছিল-
- প্রায় 100 বছর আগে সম্পাদিত বিভিন্ন সন্ধিগুলি লুথার পন্থীদের যে সমস্ত বিশেষ অধিকার দিয়েছিল, তা ক্যাথলিক পন্থীদের ক্ষেত্রেও সমানভাবে প্রযোজ্য হবে|
- চার্চের যে সমস্ত ভূসম্পত্তি বা প্রোটেস্ট্যান্ট বা ক্যাথলিকদের যেসব জায়গায় নিজ মালিকানধীন ছিল, সেগুলির কোন পরিবর্তন হবে না|
- ইম্পেরিয়াল বিচারালয়ের অর্ধেক বিচারক নিযুক্ত হবে ক্যাথলিক পক্ষ থেকে, আর বাকি অর্ধেক মনোনীত করবে প্রোটেস্ট্যান্টরা|
- বিভিন্ন জার্মান রাষ্ট্রের সীমানা পুনর্বিন্যাস করা হয়| পশ্চিম পমেরেনিয়া হারানোর ক্ষতিপূরণ হিসেবে ব্রান্ডেণবার্গকে পূর্ব পমেরেনিয়া দেওয়া হয়|
- এই সম্মেলনের রাষ্ট্র প্রধানরা হল্যান্ড ও ইজরায়েলের স্বাধীনতা সম্পূর্ণভাবে মেনে নিয়েছিল|
ওয়েস্টফেলিয়া চুক্তির গুরুত্ব
- এই সন্ধি তৎকালীন ইউরোপের বাস্তব পরিস্থিতিকে মেনে নিয়েছিল| সেই কারণে এই চুক্তি ইউরোপের ইতিহাসে সুদৃঢ় প্রভাব রাখতে পেরেছিল| একথা বাস্তব সত্য যে, এই চুক্তির দ্বারা 30 বছর ব্যাপী যুদ্ধের পরিসমাপ্তি ঘটে ছিল|
- পবিত্র রোমান সম্রাটরা প্রোটেস্ট্যান্ট মতবাদকে নির্মূল করার জন্য সর্বশক্তি নিয়োগ করেছিল, কিন্তু তারা সেভাবে ফলপ্রসূ হয়নি| এর প্রভাব হিসাবে দেখা যায় যে, পরবর্তীকালে রোমান সম্রাটদের মর্যাদা বহুগুণে হ্রাস পায়|
- 1648 খ্রিষ্টাব্দের পর ইউরোপীয় রাজনীতির ভরকেন্দ্র জার্মানি থেকে সরে আসে ফ্রান্সে এবং ফ্রান্স ও ইউরোপের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়ে উঠে|
- পবিত্র রোমান সম্রাটদের রাজনৈতিক অধিকার অন্তত সীমিত হয়ে পড়ে| জার্মানির উপর রোমান সম্রাটদের প্রভাব আলগা না হতেই সেখানে অসংখ্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিভিন্ন রাষ্ট্রের জন্ম নেই|
- এই চুক্তি আধুনিক স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রগুলির উত্থানের সুগম পথ তৈরি করে দিয়েছিলো| রাষ্ট্রে রাষ্ট্রে দূতাবাস, দেশে দেশে কূটনৈতিক আইন, এছাড়াও যুদ্ধের সময় অসামরিক ব্যক্তিদের নিরাপত্তার জন্য আন্তর্জাতিক আইন তৈরি হয়|
ওয়েস্টফেলিয়া চুক্তি কতগুলি আন্তর্জাতিক সমস্যা সৃষ্টি করেছিল, যেমন- অস্ট্রিয়া-রাশিয়ার সংঘাত প্রভৃতি| এইসব সংঘাত পরবর্তীকালে ইউরোপের রাষ্ট্র ব্যবস্থার পুরো ছকটাকেই পাল্টে দিয়েছিল|
তথ্যসূত্র
- অধ্যাপক গোপালকৃষ্ণ পাহাড়ি, "ইউরোপের ইতিবৃত্ত"
- C. Warren Hollister, "Medieval Europe: A Short History".
- Simon Jenkins, "A Short History of Europe".
সম্পর্কিত বিষয়
- মূল্য বিপ্লব বলতে কি বুঝ (আরো পড়ুন)
- অলিভার ক্রমওয়েল বা ওলিভের ক্রুমউল (আরো পড়ুন)
- রেস্টোরেশন বা স্টুয়ার্ট রাজবংশের পুনঃপ্রতিষ্ঠা, 1660 (আরো পড়ুন)
সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ| আশাকরি আমাদের এই পোস্টটি আপনার ভালো লাগলো| আপনার যদি এই পোস্টটি সম্বন্ধে কোন প্রশ্ন থাকে, তাহলে নিচে কমেন্টের মাধ্যমে আমাদেরকে জানাতে পারেন এবং অবশ্যই পোস্টটি শেয়ার করে অপরকে জানতে সাহায্য করুন|
.......................................