1757 খ্রিস্টাব্দে পলাশী যুদ্ধের পর থেকে বাংলার রাজনীতি দ্রুত পরিবর্তন ঘটে| সিরাজকে পদচ্যুত করার পর ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির তৎকালীন কর্ণবীর রবার্ট ক্লাইভ মীরজাফরকে বাংলার নবাব পদে আবিষ্ট করেন| এই সময় থেকে বাংলার নবাবের স্বাধীন সত্ত্বা বলে কিছুই ছিল না|
অচিরে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক দাবি-দাওয়া নবাব মীরজাফরকে কোম্পানির বিরুদ্ধাচরণ করতে বাধ্য করে| এই বিরোধিতার মূল্য হিসেবে মীরজাফরকে বাংলার মসনদ হারাতে হয় এবং তার জায়গায় স্থলাভিষিক্ত হন মীরজাফরের জামাতা মীর কাসিম|
ব্রিটিশ পতাকা |
নবাব মীর কাসিম কূটনৈতিক পরিচয় দিয়ে ইংরেজদের প্রভাব মুক্ত হয়ে স্বাধীনভাবে শাসনকার্য পরিচালনার চেষ্টা করেন| তিনি নবাবের আর্থিক ব্যবস্থা, উন্নতি ও সামরিক শক্তি বৃদ্ধির দিকে গুরুত্ব দেন| মূলত দস্তকের অপব্যবহারকে কেন্দ্র করে উভয়ের মধ্যে সংঘর্ষ হয়| মীর কাসিম অযোধ্যার নবাব সুজাউদ্দৌলা ও দিল্লির বাদশাহ দ্বিতীয় শাহ আলমকে নিয়ে ইংরেজ বিরোধী শক্তি জোট গঠন করেন, কিন্তু বক্সারের যুদ্ধে তিনি চূড়ান্তভাবে পরাজিত হন|
বক্সারের যুদ্ধ থেকে উদ্ভূত পরিস্থিতি পুঙ্খানুপুঙ্খ রূপে পর্যালোচনা করে ইংরেজরা সিদ্ধান্তে উপনীত হয় যে, বক্সারের যুদ্ধের মাধ্যমে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলা যে ক্ষমতা লাভ করেছে, তা আইনগত কোনো ভিত্তি নেই| এই আইনগত ভিত্তি অর্জনের উদ্দেশ্যে এবং কোম্পানির স্বার্থ রক্ষা করতে ইংরেজরা দ্বিতীয় শাহ আলমের সাথে এক ঐতিহাসিক সন্ধি স্বাক্ষর করেন|
এই সন্ধির শর্তানুসারে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি দিল্লির বাদশা দ্বিতীয় শাহ আলমের মর্যাদা ও ক্ষমতা স্বীকৃতি পায়| বাদশাহের সম্মান রক্ষার্থে ইংরেজরা অযোধ্যার নবাবের কাছ থেকে প্রাপ্ত "কারা" ও "এলাহাবাদ অঞ্চল" দ্বিতীয় শাহ আলমকে অর্পণ করেন| এছাড়া ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি তাকে বার্ষিক 26 লক্ষ টাকার কর দিতে সক্ষম হন| এর বিনিময় অবশ্য ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে বাংলা, বিহার, উড়িষ্যার রাজস্ব আদায়ের অধিকার দেওয়া হয়|
.......................................
বক্সারের যুদ্ধ থেকে উদ্ভূত পরিস্থিতি পুঙ্খানুপুঙ্খ রূপে পর্যালোচনা করে ইংরেজরা সিদ্ধান্তে উপনীত হয় যে, বক্সারের যুদ্ধের মাধ্যমে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলা যে ক্ষমতা লাভ করেছে, তা আইনগত কোনো ভিত্তি নেই| এই আইনগত ভিত্তি অর্জনের উদ্দেশ্যে এবং কোম্পানির স্বার্থ রক্ষা করতে ইংরেজরা দ্বিতীয় শাহ আলমের সাথে এক ঐতিহাসিক সন্ধি স্বাক্ষর করেন|
এই সন্ধির শর্তানুসারে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি দিল্লির বাদশা দ্বিতীয় শাহ আলমের মর্যাদা ও ক্ষমতা স্বীকৃতি পায়| বাদশাহের সম্মান রক্ষার্থে ইংরেজরা অযোধ্যার নবাবের কাছ থেকে প্রাপ্ত "কারা" ও "এলাহাবাদ অঞ্চল" দ্বিতীয় শাহ আলমকে অর্পণ করেন| এছাড়া ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি তাকে বার্ষিক 26 লক্ষ টাকার কর দিতে সক্ষম হন| এর বিনিময় অবশ্য ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে বাংলা, বিহার, উড়িষ্যার রাজস্ব আদায়ের অধিকার দেওয়া হয়|
বৃটিশ সৈনিক |
ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির দেওয়ানি লাভের তাৎপর্য
ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি দেওয়ানি লাভের রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক উভয় ক্ষেত্রে কিছু তাৎপর্য রয়েছে, যেমন-- রাজনৈতিক দিক থেকে কোম্পানির এই দেওয়ানি লাভ ছিল বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা| বস্তুত 1757 খ্রিষ্টাব্দের পর থেকে কোম্পানি বাংলার যে অধিকার পেয়েছিলেন, তার বৈধতা স্বীকৃতি পায় দেওয়ানি লাভের পর থেকে| ঐতিহাসিক পি.জে মার্শাল এই ঘটনাকে উপ-সাম্রাজ্যবাদ আখ্যা দিয়েছেন| দেওয়ানি লাভের গুরুত্ব সম্পর্কে এই কথা মোটামুটি নিশ্চিতভাবে বলা যায় যে, বাংলার নবাব কোম্পানির বৃত্তিভোগীতে পরিণত হয়েছিলেন|
- অর্থনৈতিক দিক থেকে ইংরেজদের দেওয়ানি লাভ ভারতবর্ষের ইতিহাসে এক যুগ সন্ধিক্ষণ হিসাবে চিহ্নিত করা যায়| এই অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য কোম্পানির সরকার ভারতবর্ষের বিভিন্ন জায়গায় নিজেদের ক্ষমতা বিস্তার করতে পেরেছিলেন|
তথ্যসূত্র
- সুমিত সরকার, "আধুনিক ভারত"
- শেখর বন্দ্যোপাধ্যায়, "পলাশি থেকে পার্টিশন"
- Dennis Kincaid, "British Social Life In India, 1608–1937".
সম্পর্কিত বিষয়
- 1946 সালের নৌ বিদ্রোহ (আরো পড়ুন)
- সম্পদের বহির্গমন তত্ত্ব এবং এটি কিভাবে বাংলার অর্থনীতিকে প্রভাবিত করেছিল (আরো পড়ুন)
- ১৮৫৮ সালের ভারত শাসন আইন (আরো পড়ুন)
সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ| আশাকরি আমাদের এই পোস্টটি আপনার ভালো লাগলো| আপনার যদি এই পোস্টটি সম্বন্ধে কোন প্রশ্ন থাকে, তাহলে নিচে কমেন্টের মাধ্যমে আমাদেরকে জানাতে পারেন এবং অবশ্যই পোস্টটি শেয়ার করে অপরকে জানতে সাহায্য করুন|