1820 সালে যখন বিদ্যাসাগরের জন্ম হয়, তখন বাংলার ধর্ম সমাজ জীবনে এক চরম অনিশ্চয়তা দেখা দেয়| তিনি যখন সংস্কৃত কলেজে পড়াশোনা করতেন, তখন তিনি সমাজের অবক্ষয়, কুসংস্কার ও নারী জাতির দুর্দশার কথা উপলব্ধি করেছিলেন| এই জন্য তিনি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়ে সমাজ সংস্কারে ঝাঁপিয়ে পড়েন|
তিনি বিভিন্ন পত্রিকায় বাল্যবিবাহ বিরুদ্ধে প্রবন্ধ লিখতে থাকেন এবং পরবর্তীতে তিনি হিন্দু বিধবা মহিলাদের পক্ষেও বিভিন্ন কাজ করেন|
তিনি বলেন, বিভিন্ন হিন্দু শাস্ত্রের স্লোগানে বিধবা বিবাহের সমর্থন আছে| তিনি বিধবা বিবাহের জন্য বা আইন করার জন্য সরকারকে চিঠি লিখেন| তার ফলে 1856 খ্রিস্টাব্দে 15 ই নভেম্বর রেগুলেশন দ্বারা সরকার বিধবা বিবাহকে বৈধ বলে ঘোষণা করেন|
এছাড়াও তিনি বহু বিবাহের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা করেন|তিনি 50 হাজার ব্যক্তির সাক্ষর গ্রহণ করে বহু বিবাহের বিপক্ষে আইন করার জন্য সরকারের কাছে এক প্রতিবেদন পাঠান, কিন্তু তা সফল হয়নি|
নারী শিক্ষা বিস্তারে বিদ্যাসাগরের অবদান ছিল যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ এবং সুদূর প্রসারী| তিনি মনে করতেন, সমাজে নারীদের অবস্থান উন্নতির জন্য তাদেরকে শিক্ষিত করতে হবে এবং শিক্ষায় সমাজে তাদের অবস্থার পরিবর্তন করতে পারবে| তবে এজন্য তিনি গ্রাম বাংলায় 35 টি বালিকা বিদ্যালয় স্থাপন করেছিলেন এবং তিনি 1849 খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় বেথুন সাহেব এর সহযোগিতায় হিন্দু ফিমেল স্কুল(বর্তমানে বেথুন স্কুল) প্রতিষ্ঠা করেন|
পরিশেষে মহাবিদ্রোহের পর সরকার হিন্দুদের সামাজিক প্রথায় হস্তক্ষেপ করতে মোটেও রাজি ছিলেন না| তবে এই কথা ঠিক যে, রাজা রামমোহন রায়ের পরে বিদ্যাসাগরের ছাড়া আর কোন মহান মানব নারীর উন্নতির সম্পর্কে তেমন কিছু ভাবেননি|
তথ্যসূত্র
- সুমিত সরকার, "আধুনিক ভারতের ইতিহাস"
- শেখর বন্দ্যোপাধ্যায়, "পলাশি থেকে পার্টিশন"
- Sonali Bansal, "Modern Indian History".
সম্পর্কিত বিষয়
সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ| আশাকরি আমাদের এই পোস্টটি আপনার ভালো লাগলো| আপনার যদি এই পোস্টটি সম্বন্ধে কোন প্রশ্ন থাকে, তাহলে নিচে কমেন্টের মাধ্যমে আমাদেরকে জানাতে পারেন এবং অবশ্যই পোস্টটি শেয়ার করে অপরকে জানতে সাহায্য করুন|
......................................................