উত্থান ও সাম্রাজ্য বিস্তারের ক্ষেত্রে নেপোলিয়নের সীমাহীন উচ্চাকাঙ্ক্ষা ইউরোপের শক্তির ভারসাম্যকে বিনষ্ট করেছিল| নেপোলিয়নের আঘাত পড়েনি এমন কোন ইউরোপের রাজ্য ছিল না|
ইউরোপের বৃহৎ শক্তিগুলো নেপোলিয়নের লোলুপ দৃষ্টি থেকে নিজেদের বাঁচানোর জন্য সাময়িকভাবে যুদ্ধ বন্ধ করে নেপোলিয়নের বিরুদ্ধে জোট বদ্ধ হয়েছিল| নেপোলিয়নের আবির্ভাব ইউরোপে দীর্ঘস্থায়ী সংঘর্ষের সৃষ্টি করেছিল|
ইউরোপীয় রাজনীতিবিদগণ ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দে ইউরোপের পুনর্গঠন ও শান্তি রক্ষার জন্য ভিয়েনা নগরীতে সম্মেলনে উপস্থিত হন| অস্ট্রিয়া, রাশিয়া, প্রাশিয়া এবং ইংল্যান্ড প্রধান শক্তি ছিল এবং পরাজিত ফ্রান্সও এই সম্মেলনে নিজ মর্যাদায় উপস্থিত ছিলেন| অস্ট্রিয়ার প্রধানমন্ত্রী মেটারনিক, ইংল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ক্যাসালরীগ(Castlereagh), রাশিয়ার নেসেলবার্গ (Nesselrode), ফ্রান্সের ট্যালিরা(Talleyrand) এই সম্মেলনের নীতি নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করেছিল|
নেপোলিয়নের ক্ষমতা খর্ব করা এবং ইউরোপে শান্তি স্থাপন করাই ছিল এই সম্মেলনের প্রধান উদ্দেশ্য| নেপোলিয়নের দ্বারা শুধুমাত্র ইউরোপের ভারসাম্য নষ্ট হয়নি, রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাও পরিবর্তন হয়েছিল| বিভিন্ন জায়গায় রাজনৈতিক ও শাসনতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে পূর্ব অবস্থায় ফিরিয়ে আনা এবং ইউরোপে মানচিত্রের পুনঃবিন্যাস করাই ছিল ভিয়েনা সম্মেলনের প্রধান উদ্দেশ্য|
কিন্তু ইউরোপের পুনর্গঠন ছিল এই সম্মেলনের প্রধান সমস্যা| সমস্যাগুলি ছিল যে,
নেপোলিয়নের ক্ষমতা খর্ব করা এবং ইউরোপে শান্তি স্থাপন করাই ছিল এই সম্মেলনের প্রধান উদ্দেশ্য| নেপোলিয়নের দ্বারা শুধুমাত্র ইউরোপের ভারসাম্য নষ্ট হয়নি, রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাও পরিবর্তন হয়েছিল| বিভিন্ন জায়গায় রাজনৈতিক ও শাসনতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে পূর্ব অবস্থায় ফিরিয়ে আনা এবং ইউরোপে মানচিত্রের পুনঃবিন্যাস করাই ছিল ভিয়েনা সম্মেলনের প্রধান উদ্দেশ্য|
কিন্তু ইউরোপের পুনর্গঠন ছিল এই সম্মেলনের প্রধান সমস্যা| সমস্যাগুলি ছিল যে,
- ফ্রান্স ইউরোপে সমস্যা সৃষ্টি করেছিল, তার বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা অবলম্বন করা|
- জার্মানি ও পোল্যান্ডের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করা|
- স্যাক্সনীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা অবলম্বন করা, প্রভৃতি|
এই জটিল সমস্যা জটিলতর আকার ধারণ করেছিল বিজয়ী রাষ্ট্রগুলির মনোভাবের মধ্য দিয়ে|
পরবর্তীতে ইউরোপীয় রাষ্ট্রগুলির মধ্যে যে মিলন দেখা দিয়েছিল, তা ছিল ক্ষণস্থায়ী এবং এই মিলনের পশ্চাৎ একটি মাত্র কারণ ছিল| নেপোলিয়নের ক্ষমতা ও উচ্চাশার জন্য তাদের ঐক্যবদ্ধ করেছিল| কিন্তু নেপোলিয়নের পতনের পর বড় শক্তিগুলি নিজেদের সংকীর্ণ স্বার্থকে উপরে স্থান দিয়েছিল| তবুও আমরা বলতে পারি যে, চিরস্থায়ী সমাধানে মেটারনিকের অবদান ছিল সব থেকে বেশি|
বৃহৎ শক্তিগুলো ভিয়েনা সম্মেলনে উচ্চ আদর্শের কথা ঘোষণা করেছিলেন| কিন্তু এতে বিজয়ী রাষ্ট্রগুলির ক্ষমতা লিপ্সায় উদ্ভাসিত হয়েছিল| বিজয়ী রাষ্ট্রগুলি বিজিত রাজ্যের সম্পত্তি ভাগ করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছিল| ভিয়েনা সম্মেলনের নেতৃবর্গ জাতীয়তাবাদকে উপেক্ষা করেছিল| ফরাসি বিপ্লবের সুদূর প্রসারি প্রভাবকে ভিয়েনা সম্মেলনের নেতৃবর্গ বুঝে উঠতে পারেনি| নেতৃবর্গ ইউরোপের নতুন কোন শক্তিকে মর্যাদা দিতে পারিনি|
তবে এই সম্মেলনে সাম্প্রদায়িক ভাবে শান্তি প্রতিষ্ঠায় উচ্চ অবদান রয়েছে| concept of Europe এর মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রগুলি সম্মেলনের কার্যাবলীকে রক্ষা করার জন্য যে স্থায়ি শান্তি রক্ষার ব্যবস্থা করেছিলেন- তা প্রশংসার দাবি করে|
তথ্যসূত্র
- অধ্যাপক গোপালকৃষ্ণ পাহাড়ি, "ইউরোপের ইতিবৃত্ত"
- Adam Zamoyski, "Rites of Peace: The Fall of Napoleon and the Congress of Vienna".
- George Holmes, "The Oxford History of Medieval Europe".
সম্পর্কিত বিষয়
- নেপোলিয়ন কে কেন ফরাসি বিপ্লবের শিশু বলা হয় (আরো পড়ুন)
- ইংল্যান্ডের উপর নেপোলিয়নের মহাদেশীয় অবরোধ ব্যবস্থা (আরো পড়ুন)
- স্পেন কেন নেপোলিয়নের পতনের কারণ (আরো পড়ুন)
সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ| আশাকরি আমাদের এই পোস্টটি আপনার ভালো লাগলো| আপনার যদি এই পোস্টটি সম্বন্ধে কোন প্রশ্ন থাকে, তাহলে নিচে কমেন্টের মাধ্যমে আমাদেরকে জানাতে পারেন এবং অবশ্যই পোস্টটি শেয়ার করে অপরকে জানতে সাহায্য করুন|
.......................................