ফরাসি প্রোটেস্ট্যান্টরা হিউগনো(Huguenot) নামে পরিচিত| ফরাসি রাজ চতুর্দশ হেনরি দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য 1598 সালে সম্পাদিত "Edict of nantes" দ্বারা হিউগনোদের ধর্ম পালনের স্বাধীনতা এবং কিছু রাজনৈতিক স্বাধীনতা প্রদান করেছিলেন|
কিন্তু পরবর্তী শাসক চতুর্দশ লুই ফ্রান্সে ধর্ম নৈতিক ঐক্য প্রতিষ্ঠা করার জন্য হিউগনোদের দমন করতে উদ্যত হন| লুই চেয়েছিলেন ফ্রান্সে "এক রাজা, এক জাতি, এক ধর্ম" প্রতিষ্ঠা করতে, তার উদ্দেশ্য পূরণে হিউগনোরা বাধার সৃষ্টি করেছিল|
প্রথমে তিনি অর্থ, চাকরি ইত্যাদি লোভ দেখিয়ে হিউগোনের ক্যাথলিক ধর্মে ধর্মান্তরিত করার চেষ্টা করেন, কিন্তু তার এই চেষ্টা ব্যর্থ হয়| অতঃপর লুই তাদের উপর নানাপ্রকার নৃশংস অত্যাচার শুরু করে|
হিউগনোদের গৃহে ফরাসি সৈন্য মোতায়েন করার ব্যবস্থা করা হয় এবং তাদের উপর প্রাণহানি ছাড়া আর সকল প্রকার অত্যাচার করার নির্দেশ দেওয়া হয়| তার এই নির্যাতন মূলক ব্যবস্থা ড্র্যাগোনাড(Dragonnade) নামে পরিচিত|
অবশেষে শেষ চেষ্টা হিসাবে লুই 1685 সালে "Edict of nantes" প্রত্যাহার করে নেন, এর ফলে বহু হিউগনো ফ্রান্স ত্যাগ করতে বাধ্য হয়| আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ফ্রান্সের মর্যাদা বহুলাংশে ক্ষুন্ন হয়| প্রোটেস্ট্যান্টরা যতদিন ধর্মপালনের স্বাধীনতা ভোগ করেছিল, ততদিন ইউরোপের অন্যান্য প্রোটেস্ট্যান্টরা রাষ্ট্রসমূহ ফ্রান্সের বিরুদ্ধে শত্রুভাবাপন্ন হয়নি|
কিন্তু ধর্মীয় স্বাধীনতা বিলুপ্ত হওয়ায় ইউরোপের প্রোটেস্ট্যান্ট দেশগুলির মধ্যে ফ্রান্স বিরোধী মনোভাব দেখা দেয়| এক কথায় বলা যায়, "Edict of nantes" প্রত্যাহারের মধ্যেই ভবিষ্যতে ইউরোপের রাজনীতিতে ফ্রান্সের প্রাধান্য লুপ্ত হওয়ার বীজ নিহিত ছিল|
তথ্যসূত্র
- অধ্যাপক গোপালকৃষ্ণ পাহাড়ি, "ইউরোপের ইতিবৃত্ত"
- C. Warren Hollister, "Medieval Europe: A Short History".
সম্পর্কিত বিষয়
- রেনেসাঁ ও মানবতাবাদ (আরো পড়ুন)
- মার্টিন লুথার এবং ইউরোপের ধর্ম সংস্কার আন্দোলন (আরো পড়ুন)
- ইতালীয় রেনেসাঁর চিত্রকলা (আরো পড়ুন)
সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ| আশাকরি আমাদের এই পোস্টটি আপনার ভালো লাগলো| আপনার যদি এই পোস্টটি সম্বন্ধে কোন প্রশ্ন থাকে, তাহলে নিচে কমেন্টের মাধ্যমে আমাদেরকে জানাতে পারেন এবং অবশ্যই পোস্টটি শেয়ার করে অপরকে জানতে সাহায্য করুন|
.......................................