আধুনিক পাশ্চাত্য সভ্যতার অন্যতম অবদান ছিল বৈজ্ঞানিক অগ্রগতি| কোপার্নিকাসের(1473-1543) পূর্ববর্তী ইউরোপে বিশ্বব্রহ্মাণ্ড এবং প্রকৃতিলোক সংক্রান্ত ধারণা, প্রধানত অ্যারিস্টটলের কলাবিদ্যা, টলেমির জ্যোতির্বিজ্ঞান এবং খ্রিস্টান ধর্ম শাস্ত্রের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছিল| এই ধারণায় নিশ্চল পৃথিবীর অবস্থান ছিল ব্রহ্মাণ্ডের কেন্দ্র চন্দ্র, সূর্য, গ্রহ নক্ষত্র- একে কেন্দ্র করেই আবর্তিত হত এবং সমস্ত সৃষ্টির মূলে ছিলেন ঈশ্বর| সমস্ত প্রাকৃতিক ক্রিয়াকলাপ বা বিপর্যয়ের যথাযথ বা যুক্তিসম্মত ব্যাখ্যা সেই বিজ্ঞান দিতে পারেনি|
জলস্ফীতি, ঝড়-ঝঞ্ঝাট, বন্যা বা ফসলহানি অথবা মৃত্যুর কারণ কি?- তার উত্তর সেই বিজ্ঞানের জানা ছিল না| কিন্তু ষোড়শ এবং সপ্তদশ শতকের নব্য বিজ্ঞান চর্চার প্রকৃতি ও জীবলোক সম্বন্ধীয় বহু প্রচলিত ধ্যান-ধারণাকে ভ্রান্ত প্রমাণ করে চিন্তার জগতে এক বিপ্লব ঘটেছিল| সৌরজগৎ, গ্রহ-নক্ষত্র, শরীর বিজ্ঞান, চিকিৎসাশাস্ত্র, মধ্যাকর্ষণ শক্তি, স্থল ও জলপথের আবিষ্কারক ও দিক নির্ণয় যন্ত্র আবিষ্কার, বিভিন্ন ক্ষেত্রে এই যুগের গবেষণার নব দিগন্ত উন্মোচনের সহায়তা করেছিল| কোপার্নিকাস, গ্যালিলিও, লিওনার্দো দা ভিঞ্চি, নিউটন প্রমূখ ছিলেন এই সময়ে বিশিষ্ট পণ্ডিত ব্যক্তিত্ব| বিজ্ঞানের বিভিন্ন দিকে এঁরা এদের মৌলিক চিন্তা ভাবনা, অনুসন্ধান এবং অন্তর্দৃষ্টির স্বাক্ষর রেখেছিলেন|
এই গ্রন্থে কোপার্নিকাস দেখালেন, জ্যোতিষ্ক গোলক সমূহ পৃথিবীকে নয় সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে, এতে সময় লাগে এক বছর| কোপার্নিকাসের সূর্য মন্ডল সংক্রান্ত তত্ত্ব জ্যোতির্বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে একটা মৌলিক পরিবর্তন এনে দেয়| সূর্যকে মহাকাশের কেন্দ্রে প্রতিষ্ঠিত করে ব্রহ্মাণ্ড সম্পর্কে প্রচলিত ধারণা তিনি পুরোপুরি পাল্টে দিয়েছিলেন|
পরবর্তীতে জ্যোতির্বিজ্ঞানী টাইকো ব্রাহে ও জোহানেস কেপলার কোপার্নিকাসের সূর্যকেন্দ্রিক তত্ত্বকে সমর্থন করেন| কেপলারের মতে, পৃথিবীর, মঙ্গল ও অন্যান্য গ্রহ গুলির একটি ডিম্বাকারে বৃত্ত পথে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে| তিনি আরো বলেন যে, সূর্যকে আবর্তন করতে বিভিন্ন গ্রহ তারা নিজস্ব সময় নেয়| এই বিভিন্ন সময়গুলি গাণিতিক সূত্রের সাহায্যে নির্ধারণ করা যায়|
মানুষের অসুখ বিশেষত সংক্রামক রোগের কারণও প্রতিকার বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ বিশেষ জরুরী হয়ে পড়ে| প্লেগ, গুটি বসন্ত প্রভৃতি সংক্রমণ রোগের আক্রমণ ইউরোপের জনজীবনকে বিধ্বস্ত করে দিয়েছিল| সুতরাং সংক্রামক রোগের প্রাদুর্ভাব থেকে মানুষকে রক্ষা করা এই যুগের চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের সামনে এক বড় চ্যালেঞ্জ ছিল|
ব্যক্তিগত প্রচেষ্টায় চিকিৎসা শাস্ত্রে যাঁরা নতুন আবিষ্কারের দরজা খুলে দিয়েছিল, তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন প্যারাসেলসাস প্রমূখ| অন্যদিকে ইংরেজ বিজ্ঞানী উইলিয়াম হার্ভে শরীরের রক্ত চলাচল বিদ্যার সূত্রপাত করেন| গ্রহের আবর্তনের মত রক্ত সঞ্চালন হলো আরেকটি বড় আবিষ্কার|
বেকন তাঁর "নোভাম অর্গানাম" গ্রন্থে পরীক্ষা ও পর্যবেক্ষণের কথা বলেন| রেনে দেকার্ত ছিলেন গণিতজ্ঞ, তিনি তাঁর "Discourse on method" গ্রন্থে গণিতজ্ঞদের উপযোগি বিমৃত, অবরোহী যুক্তি বিন্যাসের অবতারণা করেছিলেন| দেকার্ত মনে করতেন যে, একজন প্রকৃত বিজ্ঞানীর উচিত কোনো বিশেষ অবস্থায় যে আইন গুলি প্রাকৃতিক ঘটনাগুলিকে নির্দিষ্ট নিয়মের মধ্যে আবদ্ধ করে তাদের যথার্থতা ব্যাখ্যা করা|
প্রাচীন গ্রিক, ইসলামী ও খ্রিস্টান যাজকদের গড়ে তোলা কল্পবিজ্ঞানের অট্টালিকায় প্রচন্ডভাবে ভাঙ্গন ধরেছিল| ষোড়শ ও সপ্তদশ শতক নিয়ে এলো এক নতুন বৈজ্ঞানিক ধ্যান-ধারণা ও চিন্তা প্রণালী|
মধ্যযুগের মুসলিম ও খ্রিস্টান যাজকরা গ্রিকদের কাছ থেকে বিশ্ব-ব্রহ্মাণ্ডের যে জ্ঞান পেয়েছিলেন, তা ছিল সীমিত, অনেকটা কাল্পনিক ও ধর্ম নির্ভর| নতুন বিজ্ঞানের যে প্রকৃতিগত ব্যাখ্যা দিয়েছিল, তা ছিল ধর্মনিরপেক্ষ ও বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার উপর প্রতিষ্ঠিত|
এরিস্টটলের ক্রমোচ্চস্তরের বিন্যস্ত মহাবিশ্বের স্থান নিয়েছিল নিউটনের মহাবিশ্বের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা| নতুন বিজ্ঞান ছিল একই সঙ্গে ধ্বংসাত্মক ও গঠনমূলক| পুরনো ধ্যান-ধারণাকে ধ্বংস করে নতুন করে বিশ্ব পরীক্ষাগারের সূচনা করেছিল| মানুষের পুরনো ধ্যান-ধারণা, মহাবিশ্বে তার অবস্থান এবং ঈশ্বর সম্পর্কে চিন্তা-ভাবনা অবশ্যই ধাক্কা খেয়েছিল|
জলস্ফীতি, ঝড়-ঝঞ্ঝাট, বন্যা বা ফসলহানি অথবা মৃত্যুর কারণ কি?- তার উত্তর সেই বিজ্ঞানের জানা ছিল না| কিন্তু ষোড়শ এবং সপ্তদশ শতকের নব্য বিজ্ঞান চর্চার প্রকৃতি ও জীবলোক সম্বন্ধীয় বহু প্রচলিত ধ্যান-ধারণাকে ভ্রান্ত প্রমাণ করে চিন্তার জগতে এক বিপ্লব ঘটেছিল| সৌরজগৎ, গ্রহ-নক্ষত্র, শরীর বিজ্ঞান, চিকিৎসাশাস্ত্র, মধ্যাকর্ষণ শক্তি, স্থল ও জলপথের আবিষ্কারক ও দিক নির্ণয় যন্ত্র আবিষ্কার, বিভিন্ন ক্ষেত্রে এই যুগের গবেষণার নব দিগন্ত উন্মোচনের সহায়তা করেছিল| কোপার্নিকাস, গ্যালিলিও, লিওনার্দো দা ভিঞ্চি, নিউটন প্রমূখ ছিলেন এই সময়ে বিশিষ্ট পণ্ডিত ব্যক্তিত্ব| বিজ্ঞানের বিভিন্ন দিকে এঁরা এদের মৌলিক চিন্তা ভাবনা, অনুসন্ধান এবং অন্তর্দৃষ্টির স্বাক্ষর রেখেছিলেন|
সৌরজগৎ |
আইজ্যাক নিউটন |
জ্যোতির্বিজ্ঞানের অগ্রগতি
আধুনিক বিজ্ঞানের অগ্রগতির ইতিহাস পর্যালোচনা করলে যার নাম প্রথমে উচ্চারিত হয় তিনি ছিলেন কোপার্নিকাস, তাঁর আবিষ্কার জ্যোতির্বিজ্ঞানকে নতুন ব্যাখ্যা দেয়| এতদিন পর্যন্ত টলেমির তত্ত্ব শ্রদ্ধার সঙ্গে গৃহীত হয়েছিল| এর প্রধান কারণ ছিল, চার্চের ধারণা সঙ্গে অনেকটা সঙ্গতিপূর্ণ ছিল টলেমির তত্ত্ব| কিন্তু ষোড়শ শতকের নিকোলাস কোপার্নিকাস টলেমির ধারণাকে অস্বীকার করেন এবং 1543 সালে কোপার্নিকাসের বিখ্যাত গ্রন্থ "On the Revolutions of the Heavenly Spheres" প্রকাশিত হয়|এই গ্রন্থে কোপার্নিকাস দেখালেন, জ্যোতিষ্ক গোলক সমূহ পৃথিবীকে নয় সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে, এতে সময় লাগে এক বছর| কোপার্নিকাসের সূর্য মন্ডল সংক্রান্ত তত্ত্ব জ্যোতির্বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে একটা মৌলিক পরিবর্তন এনে দেয়| সূর্যকে মহাকাশের কেন্দ্রে প্রতিষ্ঠিত করে ব্রহ্মাণ্ড সম্পর্কে প্রচলিত ধারণা তিনি পুরোপুরি পাল্টে দিয়েছিলেন|
পরবর্তীতে জ্যোতির্বিজ্ঞানী টাইকো ব্রাহে ও জোহানেস কেপলার কোপার্নিকাসের সূর্যকেন্দ্রিক তত্ত্বকে সমর্থন করেন| কেপলারের মতে, পৃথিবীর, মঙ্গল ও অন্যান্য গ্রহ গুলির একটি ডিম্বাকারে বৃত্ত পথে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে| তিনি আরো বলেন যে, সূর্যকে আবর্তন করতে বিভিন্ন গ্রহ তারা নিজস্ব সময় নেয়| এই বিভিন্ন সময়গুলি গাণিতিক সূত্রের সাহায্যে নির্ধারণ করা যায়|
গ্যালিলিও গ্যালিলি
তবে বৈজ্ঞানিক তত্ত্বের অবতরণ এবং উপযুক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে সেই তত্ত্বকে প্রমাণ করার বিষয়ে সমকালীন জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের মধ্যে অনেকটাই এগিয়ে ছিলেন গ্যালিলিও গ্যালিলি(1564-1642)| তিনি এরিস্টটল ও টলেমিকে সরাসরি আক্রমণ করে তাদের ভুল প্রমাণ করেছিলেন| নিজের কারিগরি জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে তিনি তৈরি করেছিলেন টেলিস্কোপ বা দূরবীক্ষণ যন্ত্র, যার সাহায্যে তিনি সৌর কলঙ্ক, বৃহস্পতির চারটি উপগ্রহ, শুক্র ও মঙ্গলের কলা এবং শনির বলয় প্রত্যক্ষ করেছিলেন|গ্যালিলিও গ্যালিলি |
টেলিস্কোপ |
গণিত শাস্ত্র
জ্যোতির্বিদ্যা চর্চাকে কেন্দ্র করে এই সময় গণিত শাস্ত্রেও অগ্রগতি ঘটে| বীজগণিত ও ত্রিকোণমিতি চর্চাও বৃদ্ধি পায়| স্কটল্যান্ডের জন নেপিয়ার আবিষ্কার করেন "লগারিদম তত্ত্ব"|প্রযুক্তি ও চিকিৎসা বিজ্ঞানের উন্নতি
শুধু বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে নয় প্রযুক্তির ক্ষেত্রেও যথেষ্ট উন্নতি লক্ষ্য করা গিয়েছিল| খনি নিষ্কাশন বিদ্যা, ধাতুবিদ্যা ও রসায়ন বিদ্যায় উন্নতি হয়েছিল| ফলে অপসারণ যাদুবিদ্যা জনগণের আস্থা হারায়|মানুষের অসুখ বিশেষত সংক্রামক রোগের কারণও প্রতিকার বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ বিশেষ জরুরী হয়ে পড়ে| প্লেগ, গুটি বসন্ত প্রভৃতি সংক্রমণ রোগের আক্রমণ ইউরোপের জনজীবনকে বিধ্বস্ত করে দিয়েছিল| সুতরাং সংক্রামক রোগের প্রাদুর্ভাব থেকে মানুষকে রক্ষা করা এই যুগের চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের সামনে এক বড় চ্যালেঞ্জ ছিল|
ব্যক্তিগত প্রচেষ্টায় চিকিৎসা শাস্ত্রে যাঁরা নতুন আবিষ্কারের দরজা খুলে দিয়েছিল, তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন প্যারাসেলসাস প্রমূখ| অন্যদিকে ইংরেজ বিজ্ঞানী উইলিয়াম হার্ভে শরীরের রক্ত চলাচল বিদ্যার সূত্রপাত করেন| গ্রহের আবর্তনের মত রক্ত সঞ্চালন হলো আরেকটি বড় আবিষ্কার|
মানব দেহ |
ফ্রান্সিস বেকন এবং রেনে দেকার্ত
সপ্তদশ শতকের প্রথমার্ধে দুইজন প্রভাবশালী দার্শনিক যারা বৈজ্ঞানিক বিপ্লবের প্রবল সমর্থক ছিলেন তারা হলেন ফ্রান্সিস বেকন এবং রেনে দেকার্ত| এঁরা প্রাচীন বৈজ্ঞানিক ধ্যান ধারণাকে সমালোচনা করে বৈজ্ঞানিক বিপ্লব এর পরিবেশ তৈরি করেছিলেন|বেকন তাঁর "নোভাম অর্গানাম" গ্রন্থে পরীক্ষা ও পর্যবেক্ষণের কথা বলেন| রেনে দেকার্ত ছিলেন গণিতজ্ঞ, তিনি তাঁর "Discourse on method" গ্রন্থে গণিতজ্ঞদের উপযোগি বিমৃত, অবরোহী যুক্তি বিন্যাসের অবতারণা করেছিলেন| দেকার্ত মনে করতেন যে, একজন প্রকৃত বিজ্ঞানীর উচিত কোনো বিশেষ অবস্থায় যে আইন গুলি প্রাকৃতিক ঘটনাগুলিকে নির্দিষ্ট নিয়মের মধ্যে আবদ্ধ করে তাদের যথার্থতা ব্যাখ্যা করা|
আইজ্যাক নিউটন
তবে বৈজ্ঞানিক বিপ্লবের আলোচনায় যার উল্লেখ্য ছাড়া অসম্পূর্ণ থেকে যাবে, তিনি হলেন সেরা আইজ্যাক নিউটন| পদার্থবিদ্যা ও জোতির্বিদ্যার ক্ষেত্রে তাঁর অবদান বিশেষভাবে স্মরণীয়| পদার্থবিদ্যায় তিনিই প্রথম আলো সম্পর্কিত গবেষণা শুরু করেন| অঙ্কনশাস্ত্রে তিনি যোগ করেছিলেন "Differential and integral calculus"| কলাবিদ্যাতে তাঁর আবিষ্কার পৃথিবীর মধ্যাকর্ষণ শক্তি ও গতি| তিনি এটাও বলেন যে, পৃথিবীর যেমন মধ্যাকর্ষণ শক্তি রয়েছে, সমানভাবে তা সৌরজগতের অন্যান্য গ্রহের ক্ষেত্রেও বিরাজমান| 1687 সালে নিউটন তাঁর সুবিখ্যাত গ্রন্থ "ফিলোসফিয়া ন্যাচারালিস প্রিন্সিপিয়া ম্যাথামেটিকা" প্রকাশিত হয়, যা "Principia" নামেই বেশি পরিচিত|মূল্যায়ন
নতুন বিজ্ঞান মানুষকে সংকীর্ণতা থেকে মুক্তি দিয়েছিল| মানুষের সংকীর্ণ প্রেক্ষিতে থেকে বিজ্ঞান মুক্তি পেয়েছিল| গ্যালিলিও এবং দেকার্ত বিজ্ঞানের উপযোগীতার কথা ভেবেছিলেন| বিমূর্ত-জ্ঞান সাধনা ছিল না, সমাজ যে বিজ্ঞান থেকে লাভবান হয়- সেই ধারণা গড়ে উঠেছিল| পর্যবেক্ষণ, গবেষণা, গাণিতিক পরীক্ষা পদ্ধতির উন্নতি বিজ্ঞানের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছিল| বৈজ্ঞানিক বিপ্লব আধুনিকতার প্রসারে সহায়ক হয়|প্রাচীন গ্রিক, ইসলামী ও খ্রিস্টান যাজকদের গড়ে তোলা কল্পবিজ্ঞানের অট্টালিকায় প্রচন্ডভাবে ভাঙ্গন ধরেছিল| ষোড়শ ও সপ্তদশ শতক নিয়ে এলো এক নতুন বৈজ্ঞানিক ধ্যান-ধারণা ও চিন্তা প্রণালী|
মধ্যযুগের মুসলিম ও খ্রিস্টান যাজকরা গ্রিকদের কাছ থেকে বিশ্ব-ব্রহ্মাণ্ডের যে জ্ঞান পেয়েছিলেন, তা ছিল সীমিত, অনেকটা কাল্পনিক ও ধর্ম নির্ভর| নতুন বিজ্ঞানের যে প্রকৃতিগত ব্যাখ্যা দিয়েছিল, তা ছিল ধর্মনিরপেক্ষ ও বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার উপর প্রতিষ্ঠিত|
এরিস্টটলের ক্রমোচ্চস্তরের বিন্যস্ত মহাবিশ্বের স্থান নিয়েছিল নিউটনের মহাবিশ্বের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা| নতুন বিজ্ঞান ছিল একই সঙ্গে ধ্বংসাত্মক ও গঠনমূলক| পুরনো ধ্যান-ধারণাকে ধ্বংস করে নতুন করে বিশ্ব পরীক্ষাগারের সূচনা করেছিল| মানুষের পুরনো ধ্যান-ধারণা, মহাবিশ্বে তার অবস্থান এবং ঈশ্বর সম্পর্কে চিন্তা-ভাবনা অবশ্যই ধাক্কা খেয়েছিল|
তথ্যসূত্র
- William E. Burns, "The Scientific Revolution: An Encyclopedia".
- Margaret C. Jacob, "The Scientific Revolution: A Brief History with Documents".
- Ar Hall, "The Scientific Revolution 1500 1800".
সম্পর্কিত বিষয়
- বৈজ্ঞানিক বিপ্লব (আরো পড়ুন)
- আইজ্যাক নিউটন ও আপেল কাহিনী (আরো পড়ুন)
- অষ্টাদশ শতকের ইউরোপের আলোকিত যুগ (আরো পড়ুন)
সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ| আশাকরি আমাদের এই পোস্টটি আপনার ভালো লাগলো| আপনার যদি এই পোস্টটি সম্বন্ধে কোন প্রশ্ন থাকে, তাহলে নিচে কমেন্টের মাধ্যমে আমাদেরকে জানাতে পারেন এবং অবশ্যই পোস্টটি শেয়ার করে অপরকে জানতে সাহায্য করুন|
.......................................