মুঘল আমলে আগত ইউরোপীয় পর্যটকদের মধ্যে অন্যতম বিখ্যাত ছিলেন ফরাসি পর্যটক ফ্রাঁসোয়া বার্নিয়ের(১৬২০-১৬৮৮)।
১৬২০ সালে তিনি ফ্রান্সের এক কৃষক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ভ্রমনের প্রতি তাঁর প্রবল নেশা ছিল। এই নেশার জন্যই তিনি ডাক্তারি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবার পর সিরিয়া, প্যালেস্টাইন এবং ১৬৫৮ খ্রিস্টাব্দে তিনি কায়রো যান। কায়রো থেকেই তিনি ভারতের সুরাট বন্দরে আসেন। ১৬৫৮ থেকে ১৬৬৮ খ্রিস্টাব্দে পর্যন্ত তিনি ভারতে ছিলেন।
ভারতের মানচিত্র |
১৬৫৮ সালে যুবরাজ দারাসিকোর অনুরোধে তিনি শাহজাহানের চিকিৎসক হিসেবে দিল্লিতে এসে উপস্থিত হন। ফ্রান্সে ফিরে তিনি তাঁর ভ্রমন কাহিনী লিখেন।১৬৭০ সালে তাঁর ভ্রমন কাহিনী "ভয়েজেস" প্রকাশিত হয়। তাঁর ভ্রমন কাহিনী থেকে ভারতের অর্থনীতি, সমাজ, রাজনীতি, বিজ্ঞান চর্চা সম্পর্কে জানা যায়।
তাঁর লেখা এবং ফ্রান্সের অর্থমন্ত্রীকে লেখার চিঠি থেকে তৎকালীন ভারতের কৃষি, বানিজ্য ও শিল্পের সুস্পষ্ট বিবরণ পাওয়া যায়। সিংহাসন নিয়ে শাহজাহানের চার পুত্রের মধ্যে যে গৃহযুদ্ধ বেঁধে ছিল, তাঁর সুষ্পষ্ট বর্ননা দিয়েছেন তিনি। তাঁর লেখা থেকে ঔরঙ্গজেবের কূটনীতি ও দৃঢ়তা সম্পর্কে জানা যায়।
তাঁর লেখা এবং ফ্রান্সের অর্থমন্ত্রীকে লেখার চিঠি থেকে তৎকালীন ভারতের কৃষি, বানিজ্য ও শিল্পের সুস্পষ্ট বিবরণ পাওয়া যায়। সিংহাসন নিয়ে শাহজাহানের চার পুত্রের মধ্যে যে গৃহযুদ্ধ বেঁধে ছিল, তাঁর সুষ্পষ্ট বর্ননা দিয়েছেন তিনি। তাঁর লেখা থেকে ঔরঙ্গজেবের কূটনীতি ও দৃঢ়তা সম্পর্কে জানা যায়।
কিন্তু ঐতিহাসিক হিসেবে তাঁর লেখা পুরোপুরি গ্রহনযোগ্য নয়- কেননা অনেক সময়েই তিনি ভারতের ব্যাখ্যা করেছেন ইউরোপীয় সমাজের সঙ্গে তুলনা করে এবং শোনা কথার উপর ভিত্তি করে, যা ঐতিহাসিক হিসেবে ঠিক নয়।
এসব সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও ভারতের ইতিহাস রচনার ক্ষেত্রে তাঁর লেখার গুরুত্ব অপরিসীম। কেননা অনান্য পর্যটকদের মতো তিনি শুধু ঘটনার বিবরণই দেননি, ঘটনার পিছনে লুকিয়ে থাকা কারণ ও ফলাফলেরও বিবরণ দিয়েছেন। এছাড়া ভারত সম্পর্কে জানার তাঁর যে আগ্রহ, তা শ্রদ্ধা না করে থাকা যায় না ।
তথ্যসূত্র
- সতীশ চন্দ্র, "মধ্যযুগে ভারত"
- Shireen Moosvi, "People, Taxation and Trade in Mughal India".