নাদির শাহের জন্ম হয় পারস্যের এক অতি দরিদ্র পরিবারে। তাঁর প্রকৃত নাম ছিল নাদির কুলি খাঁ। তিনি স্মরনীয় হয়ে আছেন ভারতে আক্রমণ এবং লুণ্ঠনের জন্য।
বাল্যে তিনি মেষ পালক এবং যৌবনে তিনি দস্যুদলের নেতৃত্ব দিতেন। ১৮৩৬ সালে নাদির শাহ পারস্যের সাফাভি বংশের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে ক্ষমতা দখল করেন। ১৮৩৬ সালে ক্ষমতা দখলের পর নাদির শাহ নিজেকে সম্রাট বলে ঘোষণা করেন এবং সাথে শাহ উপাধিও ধারণ করেন ।
নাদির শাহের ভারত আক্রমণ
১৭৩৯ সালে তিনি যখন ভারত আক্রমণ করেন, সেই সময়ে মোঘল সম্রাট মহম্মদ শাহ তাঁকে বাঁধা দেন। ক্রমে দু'পক্ষের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয় এবং মহম্মদ শাহ এই যুদ্ধে শোচনীয়ভাবে পরাজিত হন। দিল্লিতে ব্যাপক হত্যাকাণ্ড, লুণ্ঠন এবং পৈশাচিক অত্যাচার চালায় নাদির শাহের সেনাবাহিনী। তিনি বহু আসবাবপত্র, পোশাক- পরিচ্ছদ, প্রচুর মনি-মানিক্য, দাস-দাসী, দক্ষ কারিগর, প্রায় ৭০ কোটি মুদ্রা, শাহজাহানের বিখ্যাত ময়ূর সিংহাসন, কোহিনুর মনি এবং ১০ হাজার উট, ১০ হাজার ঘোড়া ও ৩০০ হাতি সঙ্গে নিয়ে যান।
নাদির শাহের এই আক্রমণের ফলে ভারতের অর্থনৈতিক কাঠামো যেমন ভেঙে পড়ে, তেমনি সঙ্গে সঙ্গে বহু নগর ও জনপদ ধ্বংস হয় এবং বিদেশে চলে যায় ভারতের বহু সম্পদ। পরিশেষে ডঃ জগদীশ নারায়ন সরকারের ভাষায় বলা যায়, "It was a big drain on the resources of the country".
তথ্যসূত্র
- সতীশ চন্দ্র, "মধ্যযুগে ভারত"
- শেখর বন্দ্যোপাধ্যায়, "অষ্টাদশ শতকের মুঘল সংকট ও আধুনিক ইতিহাস চিন্তা"
- অনিরুদ্ধ রায়, "মুঘল সাম্রাজ্যের উত্থান-পতনের ইতিহাস"
- Shireen Moosvi, "People, Taxation and Trade in Mughal India".