মুঘল যুগে ইতিহাসের অন্যতম উল্লেখযোগ্য উপাদান হল আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ। মুঘল যুগের ইতিহাস রচনায় এগুলির গুরুত্ব অপরিসীম। মুঘল যুগের সভাসদ ও সদস্যরা বিভিন্ন আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ রচনা করেছেন।
বাবর ও জাহাঙ্গীর নিজেদের আত্মজীবনী নিজেই রচনা করেছেন। এগুলি থেকে সমকালীন যুগের সমাজ, সংস্কৃতি, রাজনীতি ও অভিজাতদের জীবনযাত্রার কথা জানা যায়। অসি ও মসী চালনায় সিদ্ধহস্ত বাবর তাঁর আত্মজীবনী 'বাবরনামা' বা 'তুজুক-ই-বাবরী' নিজেই রচনা করেছিলেন। তুর্কী ভাষায় রচিত এই আত্মজীবনী একখানি অমূল্য গ্রন্থ।
শ্রীবাস্তব, লেনপুল প্রমুখ আধুনিক ঐতিহাসিকদের মতে, "সামান্যতম সন্দেহ ছাড়া এই গ্রন্থটিকে ঐতিহাসিক গ্রন্থ হিসেবে স্বীকার করা যায়"। মুঘল সম্রাট বাবর কোন কথা গোপন না রেখে খুব সরল ও স্পষ্ট ভাষায় এই গ্রন্থটি রচনা করেছেন।
এই গ্রন্থ থেকে বাবরের জীবনের প্রায় সমস্ত ঘটনা জানা যায়। এই গ্রন্থ থেকে সমকালীন যুগের মুঘল রাজপুত এবং মুঘল আফগান সম্পর্কে জানা যায়। এই গ্রন্থে বাবর যেমন নিজের প্রারম্ভিক সংঘর্ষময় পরিস্থিতি থেকে ভারতে মুঘল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার প্রতিটি মুহূর্ত উল্লেখ করেছেন; তেমনি বিভিন্ন দেশ ও জাতির আচার-আচারন, পোশাক-পরিচ্ছদ, চরিত্র, গাছপালা, পশুপাখি, নদ-নদী, পাহাড়, জঙ্গল, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সবকিছুর এক প্রাণবন্ত চিত্র তুলে ধরেছেন।
তবে ভারত সম্পর্কে বাবরের বর্ননা সর্বদা সঠিক নয়, কারণ এদেশের অনেক কিছু সম্পর্কে তিনি অজ্ঞাত ছিলেন। এই গ্রন্থটিকে ফারসিতে অনুবাদ করেন আব্দুর রহিম খান-ই-খানান এবং ফায়েদা খাঁ।
ইংরেজ ঐতিহাসিক বেভারিজ মূল তুর্কী গ্রন্থের অনুবাদ করেন। ঐতিহাসিক বেভারিজের মতে, "বাবরের আত্মজীবনী সেই সব অমূল্য গ্রন্থের মতো, যেগুলি সর্বকালের জন্য এবং তা সন্ত অগাষ্টাইন, রুশোর ও কনফেসন্ন্স এবং গিবন নিউটনের স্মৃতিকথার সমপর্যায়ভুক্ত"।
সর্বশেষে ঐতিহাসিক লেনপুলের মতে, "বাবরের প্রতিষ্ঠিত রাজবংশ ও তাঁর গৌরব বিলুপ্ত হয়েছে, কিন্তু তাঁর স্বরচিত জীবন-স্মৃতি আজও অমর ও অক্ষয়"।
ইংরেজ ঐতিহাসিক বেভারিজ মূল তুর্কী গ্রন্থের অনুবাদ করেন। ঐতিহাসিক বেভারিজের মতে, "বাবরের আত্মজীবনী সেই সব অমূল্য গ্রন্থের মতো, যেগুলি সর্বকালের জন্য এবং তা সন্ত অগাষ্টাইন, রুশোর ও কনফেসন্ন্স এবং গিবন নিউটনের স্মৃতিকথার সমপর্যায়ভুক্ত"।
সর্বশেষে ঐতিহাসিক লেনপুলের মতে, "বাবরের প্রতিষ্ঠিত রাজবংশ ও তাঁর গৌরব বিলুপ্ত হয়েছে, কিন্তু তাঁর স্বরচিত জীবন-স্মৃতি আজও অমর ও অক্ষয়"।
তথ্যসূত্র
- সতীশ চন্দ্র, "মধ্যযুগে ভারত"
- Shireen Moosvi, "People, Taxation and Trade in Mughal India".