প্রাথমিক পর্বে ভারতে তুর্কি শাসন ছিল পুরোদস্তুর সামরিক শাসন| তুর্কি সাম্রাজ্য কয়েকটি ভাগে বিভক্ত ছিল| এই এক একটি ভাগকে ইক্তা বা ইকতা বলা হতো| ইক্তা যাদের দেওয়া হতো, তাদের বলা হত ইক্তাদার বা ইকতাদার বা মাকতি|
ইক্তাদাররা নিজ নিজ এলাকায় সরকারের প্রাপ্য রাজস্ব আদায় ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব পালন করতেন|রাজস্বের একাংশ দিয়ে ইক্তাদাররা একদল সেনাবাহিনী পোষণ করতেন এবং সুলতানের প্রয়োজনে তা সরবরাহ করতে থাকতেন|
এইভাবে ইক্তাদাররা তাদের আদায়কৃত রাজস্ব থেকে নিজেদের বেতন, প্রশাসনিক ব্যয় ও সেনাদলের পোষণ বাবদ খরচ বাদ দিয়ে বাকি অর্থ সুলতানের নিকট পাঠাতেন|
ইক্তাদের যে ভূ-খণ্ড বন্দোবস্ত দেওয়া হতো, তার মালিক তারা ছিলেন না| ভূমির মালিকানা ছিল সুলতানের হাতে| যতদিন সুলতানের বিশ্বাস ভাজন থাকতেন, ততদিন তারা সেই ভূখণ্ড ভোগ দখল করতে পারতেন|
ইক্তাদের এক স্থান থেকে অন্য স্থানে বদলির করা হতো, কিন্তু কার্যত এই ইক্তা ব্যবস্থা বা ইকতা ব্যবস্থা তুর্কি সুলতানের বেশ অস্বস্তির কারণ হয়ে উঠে|
পরবর্তীতে ইক্তাদাররা দুর্নীতি গ্রস্ত হয়ে পড়ে এবং সেনাবাহিনীর খরচ ও প্রশাসনিক ব্যয় বেশি করে দেখিয়ে নিজেরাই রাজস্বের সিংহভাগের অংশ আত্মসাৎ করতে থাকে|
ঐতিহাসিক বরনি লিখেছেন যে, "ইলতুৎমিশের মৃত্যুর পর প্রত্যেক অভিজাতই নিজ নিজ বিরাট ইক্তার আয় ভোগ করতেন এবং সেখানে স্বাধীনভাবে শাসন করতে চেয়েছিলেন"|
প্রত্যেক ইক্তাদার যে সুলতানের অধীন এবং স্বাধীনভাবে তার কোনো কাজ করার ক্ষমতা নেই- এই ধারণা বদ্ধমূল করতে বলবনকে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়েছিল|
সুলতান আলাউদ্দিন খলজি ইক্তা প্রথার আমূল পরিবর্তন ঘটান| তিনি ইক্তাদারদের নিয়মিত আয়-ব্যয়ের হিসাব পরীক্ষার জন্য খেয়াজা নামে কর্মচারী নিয়োগ করেন এবং দুর্নীতিগ্রস্ত ইক্তাদারদের কঠোর শাস্তিদানের ব্যবস্থা করতেন|
পরবর্তীতে ইক্তাদাররা দুর্নীতি গ্রস্ত হয়ে পড়ে এবং সেনাবাহিনীর খরচ ও প্রশাসনিক ব্যয় বেশি করে দেখিয়ে নিজেরাই রাজস্বের সিংহভাগের অংশ আত্মসাৎ করতে থাকে|
ঐতিহাসিক বরনি লিখেছেন যে, "ইলতুৎমিশের মৃত্যুর পর প্রত্যেক অভিজাতই নিজ নিজ বিরাট ইক্তার আয় ভোগ করতেন এবং সেখানে স্বাধীনভাবে শাসন করতে চেয়েছিলেন"|
প্রত্যেক ইক্তাদার যে সুলতানের অধীন এবং স্বাধীনভাবে তার কোনো কাজ করার ক্ষমতা নেই- এই ধারণা বদ্ধমূল করতে বলবনকে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়েছিল|
সুলতান আলাউদ্দিন খলজি ইক্তা প্রথার আমূল পরিবর্তন ঘটান| তিনি ইক্তাদারদের নিয়মিত আয়-ব্যয়ের হিসাব পরীক্ষার জন্য খেয়াজা নামে কর্মচারী নিয়োগ করেন এবং দুর্নীতিগ্রস্ত ইক্তাদারদের কঠোর শাস্তিদানের ব্যবস্থা করতেন|
তথ্যসূত্র
- সতীশ চন্দ্র, "মধ্যযুগে ভারত"
- Poonam Dalal Dahiya, "Ancient and Medieval India".
সম্পর্কিত বিষয়
- 1707 থেকে 1740 সালের মধ্যে মুঘল রাজ দরবারে বিভিন্ন দলগুলির উন্নতি এবং তাদের রাজনীতি (আরো পড়ুন)
- মুঘল আমলে সেচ ব্যবস্থা (আরো পড়ুন)
- মুঘল ভারতের ব্যাংকার এবং ব্যবসায়ী সম্প্রদায় (আরো পড়ুন)
সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ| আশাকরি আমাদের এই পোস্টটি আপনার ভালো লাগলো| আপনার যদি এই পোস্টটি সম্বন্ধে কোন প্রশ্ন থাকে, তাহলে নিচে কমেন্টের মাধ্যমে আমাদেরকে জানাতে পারেন এবং অবশ্যই পোস্টটি শেয়ার করে অপরকে জানতে সাহায্য করুন|
......................................................