1527 খ্রিস্টাব্দের 16 ই মার্চ আগ্রার অদূরে খানুয়ার নামক প্রান্তরে মেবারের রানা সংগ্রাম সিংহের নেতৃত্বে গঠিত রাজপুর শক্তি জোট ও মুঘল সেনার মধ্যে এক ঐতিহাসিক যুদ্ধ সংগঠিত হয়|
এই যুদ্ধে আফগানরাও রানা সংগ্রাম সিংহের পক্ষ নিয়েছিলেন| প্রায় 10 ঘন্টা যুদ্ধে অসাধারণ বীরত্ব প্রদর্শন করে রাজপুত বাহিনী বাবরের কাছে পরাজিত হতে বাধ্য হন|
প্রকৃতপক্ষে খানুয়ার যুদ্ধকে ভারতের ইতিহাসে অন্যতম চূড়ান্ত সীমা মীমাংসক যুদ্ধ বলা যেতে পারে| ফলাফলের দিক থেকে বিচার করলে, খানুয়ার যুদ্ধের তাৎপর্য পানিপথের যুদ্ধ অপেক্ষা অধিক গুরুত্বপূর্ণ্|
অধ্যাপক এস রায়ের মতে, পানিপথের যুদ্ধ জয় লাভ করে বাবর দুর্বল লোদী রাজ বংশের অবসান ঘটিয়ে দিল্লি অধিকার করেন মাত্র| কিন্তু খানুয়ার যুদ্ধ জয়লাভ করে তিনি তৎকালীন প্রকৃত শক্তির অধিকারী রাজপুর সংহতিকে বিধ্বস্ত করেন| এর ফলে দিল্লির সুলতানি সাম্রাজ্য আবসান কালে রাজপুতদের নেতৃত্বে যে হিন্দু শাসন প্রতিষ্ঠা সম্ভাবনা দেখা দিয়েছিল, তা চিরতরে বিলুপ্ত হয়| মুঘল শক্তিকে প্রতিহত করার মত আর কোন শক্তি থাকে না|
খানুয়ার যুদ্ধের পর থেকেই মুঘল সাম্রাজ্যে রাজনৈতিক কেন্দ্র কাবুল থেকে দিল্লিতে স্থানান্তরিত হয়| খানুয়ার যুদ্ধকে বাবরের শেষ আত্মরক্ষার যুদ্ধ বলা যায়, কারণ এই যুদ্ধের ফলে বাবরের দিল্লির সিংহাসন চ্যুাতির আর কোনো সংশয় থাকল না| খানুয়ার যুদ্ধের পর বাবর যেসব যুদ্ধ করেছিল, সেগুলি ছিল সম্রাজ্য সম্প্রসারনের যুদ্ধ| তারপরে বাবরকে আর আত্মরক্ষার যুদ্ধ করতে হয়নি|
এই যুদ্ধে আফগানরাও রানা সংগ্রাম সিংহের পক্ষ নিয়েছিলেন| প্রায় 10 ঘন্টা যুদ্ধে অসাধারণ বীরত্ব প্রদর্শন করে রাজপুত বাহিনী বাবরের কাছে পরাজিত হতে বাধ্য হন|
মুঘল সাম্রাজ্যের মানচিত্র
Author- Santosh.mbahrm
Date- 26 September 2015
|
ভারতের ইতিহাসে খানুয়ার যুদ্ধের গুরুত্ব বা তাৎপর্য
খানুয়ার যুদ্ধের গুরুত্ব বা তাৎপর্য ছিল সুদূর প্রসারী| ঐতিহাসিক ঈশ্বরী প্রসাদ এর ভাষায়,"The battle of Khanwa is one of the decisive battle of Indian History"|প্রকৃতপক্ষে খানুয়ার যুদ্ধকে ভারতের ইতিহাসে অন্যতম চূড়ান্ত সীমা মীমাংসক যুদ্ধ বলা যেতে পারে| ফলাফলের দিক থেকে বিচার করলে, খানুয়ার যুদ্ধের তাৎপর্য পানিপথের যুদ্ধ অপেক্ষা অধিক গুরুত্বপূর্ণ্|
অধ্যাপক এস রায়ের মতে, পানিপথের যুদ্ধ জয় লাভ করে বাবর দুর্বল লোদী রাজ বংশের অবসান ঘটিয়ে দিল্লি অধিকার করেন মাত্র| কিন্তু খানুয়ার যুদ্ধ জয়লাভ করে তিনি তৎকালীন প্রকৃত শক্তির অধিকারী রাজপুর সংহতিকে বিধ্বস্ত করেন| এর ফলে দিল্লির সুলতানি সাম্রাজ্য আবসান কালে রাজপুতদের নেতৃত্বে যে হিন্দু শাসন প্রতিষ্ঠা সম্ভাবনা দেখা দিয়েছিল, তা চিরতরে বিলুপ্ত হয়| মুঘল শক্তিকে প্রতিহত করার মত আর কোন শক্তি থাকে না|
খানুয়ার যুদ্ধের পর থেকেই মুঘল সাম্রাজ্যে রাজনৈতিক কেন্দ্র কাবুল থেকে দিল্লিতে স্থানান্তরিত হয়| খানুয়ার যুদ্ধকে বাবরের শেষ আত্মরক্ষার যুদ্ধ বলা যায়, কারণ এই যুদ্ধের ফলে বাবরের দিল্লির সিংহাসন চ্যুাতির আর কোনো সংশয় থাকল না| খানুয়ার যুদ্ধের পর বাবর যেসব যুদ্ধ করেছিল, সেগুলি ছিল সম্রাজ্য সম্প্রসারনের যুদ্ধ| তারপরে বাবরকে আর আত্মরক্ষার যুদ্ধ করতে হয়নি|
তথ্যসূত্র
- সতীশ চন্দ্র, "মধ্যযুগে ভারত"
- অনিরুদ্ধ রায়, "মুঘল সাম্রাজ্যের উত্থান-পতনের ইতিহাস"
- Chandra Satish, "A History of Medieval India".
সম্পর্কিত বিষয়
- ভারতবর্ষে মুঘল বা মোগল সাম্রাজ্যের প্রকৃতি ও কার্যাবলীর সংক্ষিপ্ত আলোচনা (আরো পড়ুন)
- মুঘল আমলে বাংলার সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থা (আরো পড়ুন)
- 1707 থেকে 1740 সালের মধ্যে মুঘল রাজ দরবারে বিভিন্ন দলগুলির উন্নতি এবং তাদের রাজনীতি (আরো পড়ুন)
- মুঘল আমলে সেচ ব্যবস্থা (আরো পড়ুন)
সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ| আশাকরি আমাদের এই পোস্টটি আপনার ভালো লাগলো| আপনার যদি এই পোস্টটি সম্বন্ধে কোন প্রশ্ন থাকে, তাহলে নিচে কমেন্টের মাধ্যমে আমাদেরকে জানাতে পারেন এবং অবশ্যই পোস্টটি শেয়ার করে অপরকে জানতে সাহায্য করুন|
......................................................