প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী সময়ে 1916 সালে লখনৌতে জাতীয় কংগ্রেস ও নিখিল ভারতীয় মুসলিম লীগের অধিবেশন একই সঙ্গে অনুষ্ঠিত হয়। এই যৌথ অধিবেশনের দুই দলের সভাপতি হিসাবে লক্ষ্ণৌ চুক্তি বা লখনৌ চুক্তি সম্পন্ন হয়। এই চুক্তি অনুসারে স্থায়ী হয়-
- কংগ্রেস ও মুসলিম লীগ যুগ্মভাবে ভারত সরকারের কাছে ভারতীয় কাউন্সিলর বিলুপ্ত ও অন্যান্য শাসনতান্ত্রিক সংস্কারের দাবি জানাবে।
- মুসলিম লীগ কংগ্রেসের স্বরাজ এর আদর্শ স্বীকার করে নিবে।
- প্রতিটি প্রাদেশিক আইন সভায় মুসলিম সদস্যদের সংখ্যা নির্দিষ্ট করা হবে এবং তাতে স্বতন্ত্র নির্বাচন হবে।
- কেন্দ্রীয় আইন সভায় নির্বাচিত ভারতীয় প্রতিনিধিদের এক-তৃতীয়াংশ অংশ হবে মুসলমান এবং এক্ষেত্রেও তারা শুধুমাত্র মুসলমানদের ভোটে নির্বাচিত হবেন।
গান্ধীজী |
বহু রাজনৈতিক নেতা ও ঐতিহাসিক লক্ষ্ণৌ চুক্তিকে নানা সমালোচনা করেছেন। গান্ধীজী এই চুক্তির সমালোচনা করে বলেছেন, এই চুক্তি শিক্ষিত ধনী হিন্দু এবং শিক্ষিত ধনী মুসলমান নেতৃবৃন্দের মধ্যে একটি বোঝাপড়ার মাত্র। সাধারণ হিন্দু ও মুসলমান জনগণের সঙ্গে এই চুক্তির কোনো সম্পর্ক ছিল না। ঐতিহাসিক বিপান চন্দ্র এই চুক্তিকে ভারতের রাজনীতির সাম্প্রদায়িকতার দরজা/দ্বার উন্মুক্ত করেছিল বলে মনে করেন।
লক্ষ্ণৌ চুক্তির গুরুত্ব
নানা বিরূপ সমালোচনা সত্ত্বেও লক্ষ্ণৌ চুক্তির গুরুত্বকে অস্বীকার করা যায় না। এই চুক্তি ভারতের দুটি প্রধান রাজনৈতিক দলকে পরস্পরের কাছে ঘনিষ্ঠতর করে তুলেছিল এবং তারা যৌথভাবে ভারতীয় শাসন ব্যবস্থায় সংস্কারের দাবি তুলে ধরেছিল। স্বাভাবিকভাবেই এই সংহতি ব্রিটিশ সরকারের কাছে আশঙ্কা ও দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এই সময় ব্রিটিশদের বিভাজন ও শাসন নীতি সম্পূর্ণরূপে অকেজো হয়ে যায়। এই হিন্দু মুসলিম এর উপর ভিত্তি করেই গান্ধীজি খিলাফত ও অসহযোগ আন্দোলন সংগঠিত করেছিল।
তথ্যসূত্র
- সুমিত সরকার, "আধুনিক ভারতের ইতিহাস"
- শেখর বন্দ্যোপাধ্যায়, "পলাশি থেকে পার্টিশন"
- Sonali Bansal, "Modern Indian History".
সম্পর্কিত বিষয়
সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ| আশাকরি আমাদের এই পোস্টটি আপনার ভালো লাগলো| আপনার যদি এই পোস্টটি সম্বন্ধে কোন প্রশ্ন থাকে, তাহলে নিচে কমেন্টের মাধ্যমে আমাদেরকে জানাতে পারেন এবং অবশ্যই পোস্টটি শেয়ার করে অপরকে জানতে সাহায্য করুন|
......................................................