দস্তক কথাটির অর্থ ছাড়পত্র। মুঘল সম্রাট ফারুকশিয়ার 1717 খ্রিস্টাব্দে বাৎসরিক 3 হাজার টাকার বিনিময় ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে বাংলায় বিনাশুল্কে বাণিজ্য করার ছাড়পত্র প্রদান করেন। এই ছাড়পত্র বা লাইসেন্স দস্তক নামে পরিচিত।
কিন্তু বাংলার নবাব মুর্শিদকুলি খাঁ সঙ্গে কোম্পানির ঠিক হয় যে, বাংলাদেশ থেকে কোম্পানি যে দব্য সামগ্রী রপ্তানি করবে তার জন্য কোন শুল্ক দিতে হবে না। দস্তক দেখিয়ে বিনাশুল্কে ওই দব্যয সামগ্রী চলাচল করতে পারবে। তবে বাংলার অভ্যন্তরীণ বাণিজ্যে দস্তক ব্যবহার করা চলবে না। এবং কয়েকটি পণ্য- লবণ, সুরা প্রভৃতি ব্যবসায় তারা অংশগ্রহণ করবে না।
কিন্তু পলাশী যুদ্ধের পর বিশেষ করে মীরকাশিমের আমলে কোম্পানিরা দস্তকের অপব্যবহার শুরু করে। তারা অন্তত বাণিজ্যেও অংশগ্রহণ করে, এমনকি তারা তাদের আত্মীয় বা অনুগৃহীত লোকেদেরও দস্তক ব্যবহারের অনুমতি দেয়।
এমনকি অনেক সময় তারা দেশীয় বণিকদেরও চড়া দামে দস্তক বিক্রি করতে থাকে। এর ফলে একদিকে নবাব যেমন বৈধ রাজস্বব থেকে বঞ্চিত হতেন, তেমনি অন্যদিকে দেশীয় বণিকেরা এই অসম প্রতিযোগিতায় ক্ষতিগ্রস্ত হতেন। প্রতিবাদ সত্ত্বেও কোন ফল না হওয়ায় মীরকাশিম দেশীয় বণিকদের উপর থেকেও শুল্ক প্রত্যাহার করে নেন। বলাবাহুল্য যা ইংরেজ বণিকদের স্বার্থের পরিপন্থী ছিল।
.......................................
তথ্যসূত্র
- সুমিত সরকার, "আধুনিক ভারত"
- শেখর বন্দ্যোপাধ্যায়, "পলাশি থেকে পার্টিশন"
- Ishita Banerjee-Dube, "A History of Modern India".
সম্পর্কিত বিষয়
- ১৮৫৮ সালের ভারত শাসন আইন (আরো পড়ুন)
- সম্পদের বহির্গমন তত্ত্ব এবং এটি কিভাবে বাংলার অর্থনীতিকে প্রভাবিত করেছিল (আরো পড়ুন)
- ভারত ছাড়ো আন্দোলনের পটভূমি (আরো পড়ুন)
- গান্ধীজীর ধারণায় হিন্দ স্বরাজ ও সম্প্রীতি তত্ত্বাবধান (আরো পড়ুন)
সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ| আশাকরি আমাদের এই পোস্টটি আপনার ভালো লাগলো| আপনার যদি এই পোস্টটি সম্বন্ধে কোন প্রশ্ন থাকে, তাহলে নিচে কমেন্টের মাধ্যমে আমাদেরকে জানাতে পারেন এবং অবশ্যই পোস্টটি শেয়ার করে অপরকে জানতে সাহায্য করুন|