অধ্যাপক নীলকন্ঠ শাস্ত্রী, রোমিলা থাপার প্রমূখ ঐতিহাসিকগণ চোল প্রশাসনের সম্পর্কে আলোচনা করেন। স্থানীয় বিশেষত গ্রামীণ স্বায়ত্তশাসন চোল প্রশাসনের উজ্জ্বলতম বৈশিষ্ট্য ছিল। আবার গ্রামীণ জনসভাগুলো অন্তত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। গ্রামীণ এবং শহরের জনসভাগুলোতে সাধারণ মানুষের মতামত প্রতিফলিত হতো।
তবে দুই ধরনের সভা ছিল, যথা- পুর এবং সভা বা মহাসভা। এই দুই সভাতে স্থানীয় অঞ্চলের প্রাপ্তবয়স্ক ও পুরুষ সদস্যরা মিলিত থাকেন। পুর ছিল অনেক ব্যাপক আকারে সভা। অপরদিকে সভা বা মহাসভা ছিল ব্রাহ্মণদের সভা। চোল লিপিগুলোতে মহাসভা এবং তার কাজকর্মের কথা উল্লেখ আছে।
চোলদের শাসন ব্যবস্থার ভিত্তি ছিল গ্রাম। কয়েকটি গ্রাম বা কয়েকটি ক্ষুদ্র গ্রামের সমষ্টিকে বলা হতো খুররম। মন্ডলের অধিপতিকে বলা হতো মণ্ডলাকার। তার কর্তব্য ছিল মন্ডলের সমস্ত সংবাদ সম্রাটকে জানানো। আবার প্রত্যেকটি গ্রামের স্থানীয় শাসন ব্যবস্থা প্রচলিত ছিল। গ্রাম পঞ্চায়েতের মতো একটি ক্ষুদ্র গ্রাম্য মহাসভা গ্রামের সমস্ত শাসন পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন।
আবার গ্রাম্য সভা কাজ পরিদর্শনের জন্য রাজ কর্মচারীরা নিযুক্ত থাকতেন। গ্রামের যাবতীয় জমির উপর নিয়ন্ত্রণ থাকতো গ্রাম পঞ্চায়েতের। গ্রামঞ্চায়েতর সদস্যদের নিয়ে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সমিতি গঠন করা হতো। এরা পুকুর, উদ্যান, বিচারকার্যের মতো একেকটি বিষয়ের দায়িত্ব নিতো। প্রত্যেকটি গ্রাম পঞ্চায়েতে একটি করে কোষাগার ছিল। রমেশ চন্দ্র মজুমদার, নীলকন্ঠ শাস্ত্রী প্রমূখ ঐতিহাসিকগণ প্রাচীন ভারতের যে গ্রামকেন্দ্রিক-গণতান্ত্রিক প্রশাসনের উল্লেখ করেছিলেন চোলদের ব্যবস্থা তার পরিচয় পাওয়া যায়।
চোল শাসন ব্যবস্থায় দেখা যায় যে, চাষাবাদ ও বস্ত্রবয়ন গ্রামবাসীরা নিজেরাই তৈরী করতো। নগরবাসীর প্রয়োজন মেটানোর জন্য গ্রাম্য পণ্য-সামগ্রী উৎপাদনের মাত্রা যথেষ্ট পরিমাণে বৃদ্ধি পায়। এই পণ্য সামগ্রী বিশেষ এক সময় শহরের পাঠানো হতো। এর ফলে সাম্রাজ্যের বহুল মুদ্রার প্রচলন শুরু হয়।
চোল আঞ্চলিক শাসন ব্যবস্থায় দেখা যায় যে, চোল কর্মচারীরা গ্রামের সকল ব্যাপারে পরামর্শদাতা হিসেবে অংশগ্রহণ করতো। এর ফলে উঁচু মহলের রাজনৈতিক পরিবর্তন সত্যেও প্রাচীন জীবনধারা অক্ষুণ্ন ছিল। প্রতিটি গ্রামে যে গ্রামীণ সভা বা পরিষদ ছিল, তা প্রশাসনের দায়িত্বে থাকতো। কয়েকটি গ্রাম নিয়ে যে সাধারণ গ্রামীণ সভা বা পরিষদ ছিল, তা বিভিন্ন প্রকার ছিল, যেমন-
তবে দুই ধরনের সভা ছিল, যথা- পুর এবং সভা বা মহাসভা। এই দুই সভাতে স্থানীয় অঞ্চলের প্রাপ্তবয়স্ক ও পুরুষ সদস্যরা মিলিত থাকেন। পুর ছিল অনেক ব্যাপক আকারে সভা। অপরদিকে সভা বা মহাসভা ছিল ব্রাহ্মণদের সভা। চোল লিপিগুলোতে মহাসভা এবং তার কাজকর্মের কথা উল্লেখ আছে।
গ্রাম |
চোলদের শাসন ব্যবস্থার ভিত্তি ছিল গ্রাম। কয়েকটি গ্রাম বা কয়েকটি ক্ষুদ্র গ্রামের সমষ্টিকে বলা হতো খুররম। মন্ডলের অধিপতিকে বলা হতো মণ্ডলাকার। তার কর্তব্য ছিল মন্ডলের সমস্ত সংবাদ সম্রাটকে জানানো। আবার প্রত্যেকটি গ্রামের স্থানীয় শাসন ব্যবস্থা প্রচলিত ছিল। গ্রাম পঞ্চায়েতের মতো একটি ক্ষুদ্র গ্রাম্য মহাসভা গ্রামের সমস্ত শাসন পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন।
আবার গ্রাম্য সভা কাজ পরিদর্শনের জন্য রাজ কর্মচারীরা নিযুক্ত থাকতেন। গ্রামের যাবতীয় জমির উপর নিয়ন্ত্রণ থাকতো গ্রাম পঞ্চায়েতের। গ্রামঞ্চায়েতর সদস্যদের নিয়ে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সমিতি গঠন করা হতো। এরা পুকুর, উদ্যান, বিচারকার্যের মতো একেকটি বিষয়ের দায়িত্ব নিতো। প্রত্যেকটি গ্রাম পঞ্চায়েতে একটি করে কোষাগার ছিল। রমেশ চন্দ্র মজুমদার, নীলকন্ঠ শাস্ত্রী প্রমূখ ঐতিহাসিকগণ প্রাচীন ভারতের যে গ্রামকেন্দ্রিক-গণতান্ত্রিক প্রশাসনের উল্লেখ করেছিলেন চোলদের ব্যবস্থা তার পরিচয় পাওয়া যায়।
চোল শাসন ব্যবস্থায় দেখা যায় যে, চাষাবাদ ও বস্ত্রবয়ন গ্রামবাসীরা নিজেরাই তৈরী করতো। নগরবাসীর প্রয়োজন মেটানোর জন্য গ্রাম্য পণ্য-সামগ্রী উৎপাদনের মাত্রা যথেষ্ট পরিমাণে বৃদ্ধি পায়। এই পণ্য সামগ্রী বিশেষ এক সময় শহরের পাঠানো হতো। এর ফলে সাম্রাজ্যের বহুল মুদ্রার প্রচলন শুরু হয়।
চোল আঞ্চলিক শাসন ব্যবস্থায় দেখা যায় যে, চোল কর্মচারীরা গ্রামের সকল ব্যাপারে পরামর্শদাতা হিসেবে অংশগ্রহণ করতো। এর ফলে উঁচু মহলের রাজনৈতিক পরিবর্তন সত্যেও প্রাচীন জীবনধারা অক্ষুণ্ন ছিল। প্রতিটি গ্রামে যে গ্রামীণ সভা বা পরিষদ ছিল, তা প্রশাসনের দায়িত্বে থাকতো। কয়েকটি গ্রাম নিয়ে যে সাধারণ গ্রামীণ সভা বা পরিষদ ছিল, তা বিভিন্ন প্রকার ছিল, যেমন-
- করদাতা গ্রামবাসীদের সভার নাম ছিল পুর।
- ব্রাহ্মণদের সভার নাম ছিল মহাসভা।
- অধিকাংশ শহরাঞ্চলে বণিকদের সভার নাম ছিল নগরম।
গ্রামের প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষদের দ্বারা গঠিত প্রাথমিক সমিতির মাধ্যমে গ্রাম্য শাসন ছিল গ্রামীণ সংগঠনের বৈশিষ্ট্য। তবে এই সমিতিগুলো ছাড়া অনেকগুলো সামাজিক, অর্থনৈতিক, ধর্মীয় গোষ্ঠী ছিল। প্রতিটি গোষ্ঠী একটা নির্দিষ্ট বিষয়ে কাজ করতো। সেই তুলনায় গ্রাম সমিতির কর্তব্য এবং দায়িত্ব ছিল অনেক ব্যাপক। গোষ্ঠী যে নির্দিষ্ট বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত ছিল, সেই বিষয় সমিতির দায়িত্ব থাকতো। এখানে আমাদের উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, গোষ্ঠী কোন কাজে ব্যর্থ হলে সমিতির কাছে আবেদন করা যেত।
তথ্যসূত্র
- সুনীল চট্টোপাধ্যায় "প্রাচীন ভারতের ইতিহাস"
- David Gordon White, "Tantra in Practice".
- Upinder Singh, "A History of Ancient and Early Medieval India: From the Stone Age to the 12th Century".
সম্পর্কিত বিষয়
- নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় টীকা (আরো পড়ুন)
- বৈদিক এবং ঋক বৈদিক যুগে প্রশাসনিক ব্যবস্থা (আরো পড়ুন)
- প্রাচীন ভারতীয় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য (আরো পড়ুন)
সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ| আশাকরি আমাদের এই পোস্টটি আপনার ভালো লাগলো| আপনার যদি এই পোস্টটি সম্বন্ধে কোন প্রশ্ন থাকে, তাহলে নিচে কমেন্টের মাধ্যমে আমাদেরকে জানাতে পারেন এবং অবশ্যই পোস্টটি শেয়ার করে অপরকে জানতে সাহায্য করুন|
.......................................