সুলতান মাহমুদ ছিলেন গজনভি সাম্রাজ্যের সুলতান এবং মুহাম্মাদ ঘুরি ঘুরি সাম্রাজ্যের সুলতান ছিলেন। গজনভি শাসনকর্তা ও ঘুরি শাসনকর্তা উভয়পক্ষের মধ্যে সামরিক সুযোগ-সুবিধার কিছু পার্থক্য ছিল, আবার এই সুযোগ-সুবিধার পার্থক্য ছিল ভিন্ন। এই দুইজন আক্রমণকারীর ভারত অভিযানের আদর্শ ও তাদের প্রকৃতির মধ্যে কিছুু বৈসাদৃশ্য ছিল।
এই পার্থক্যগুলি হল নিম্নরূপ-
প্রথমত- সুলতান মাহমুদের ভারত অভিযানের পেছনে মুসলমান আধিপত্য স্থাপনের কোন সুপরিকল্পিত উদ্দেশ্য ছিল না। তার অভিযানগুলির মূল প্রেরণা ছিল ভারতের লুন্ঠন। কিন্তু মুহাম্মাদ ঘুরি অভিযানগুলি আরো উচ্চতরের সুপরিকল্পিত উদ্দেশ্যে দ্বারা পরিচালিত হয়েছিল। তিনি স্বপ্ন দেখতেন, ভারত জয়ের সাফল্যমন্ডিত সামরিক অভিযান, শিয়াল কোটের দুর্গ নির্মাণ প্রভৃতি তাঁর উচ্চমানের পরিচয় দেয়।
দ্বিতীয়ত- ভারতের রাজনৈতিক দুর্বলতা উভয়ই লক্ষ্য করেছিলেন। সুলতান মামুদ এই দুর্বলতার সুযোগ গ্রহণ করেছিলেন। তার ধনলিপ্সা, ধর্মান্ধতা প্রভৃতি প্রবৃত্তিগুলো চরিতার্থ করার জন্য ভারত আক্রমণ করেছিলেন, ধর্ম প্রচার করার জন্য নয়। কিন্তু অন্যদিকে মুহাম্মাদ ঘুরি সেই সুযোগ গ্রহণ করেছিলেন স্থায়ীভাবে মুসলমান সাম্রাজ্যের ভিত্তি রচনা করার জন্য এবং ভবিষ্যতে তা ধর্ম প্রচারের ক্ষেত্রে প্রস্তুত করে।
তৃতীয়ত- তবে একথা সত্য যে, সুলতান মাহমুদের অভিযান গুলির দ্বারা ভারতের অর্থনৈতিক ও সামরিক দুর্বলতা প্রকট হয়েছিল।
মুহাম্মাদ ঘুরি শুধুমাত্র রাজ্য জয় করে ক্লান্ত হয়নি, বিজিত রাজ্যগুলির শাসন ব্যবস্থার প্রতিও দৃষ্টি দিয়েছিলেন। সামরিক বিভাগে যদিও মুসলমান কর্মচারীগণ নিযুক্ত হতেন, আবার কিছু বেসামরিক বিভাগেও তিনি হিন্দুদের নিযুক্ত করতেন। তার এই শাসন নীতির ফলে ভারতে মুসলিম শাসন স্থায়ি রূপ লাভ করতে সমর্থ হয়নি। তাই ভারতবর্ষে মুসলিম শাসনের ইতিহাসে মুহাম্মদ ঘুরির অবদান সুলতান মাহমুদ এর তুলনায় অনেক বেশি ছিল। উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত অঞ্চল ও পাঞ্জাবের কিছু অংশ দখল করলেও তিনি ভারতের অভ্যন্তরে পরাজিত হিন্দু রাজ্যগুলিকে নিজ সাম্রাজ্যভুক্ত করার কোনো আগ্রহ তার ছিল না। তাই ভারতীয়দের দৃষ্টিতে তিনি ছিলেন একজন লুন্ঠনকারি মাত্র, সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠাকারী নন।
তবে একথা স্বীকার করতেই হবে যে, সুলতান মাহমুদ শিল্প, সাহিত্য, ধর্ম প্রভৃতি পৃষ্ঠপোষকতা করে ভারতবর্ষের ইতিহাসে চির অমর রয়েছেন। আলবেরুনী প্রভৃতি খ্যাতনামা কবি, ঐতিহাসিক ও সাহিত্যিক তার রাজ্যসভা অলংকৃত করতেন। গজনীর বিশ্ববিদ্যালয় ও গ্রন্থাগার প্রভৃতি স্থাপনের মামুদ এর কৃতিত্বব বিশেষভাবে স্মরণ করা যায়। কিন্তু এসব ক্ষেত্রে মুহাম্মদ ঘুরির বিশেষ কোনো অবদান নেই।
বর্তমানে ভারতের মানচিত্র |
এই পার্থক্যগুলি হল নিম্নরূপ-
প্রথমত- সুলতান মাহমুদের ভারত অভিযানের পেছনে মুসলমান আধিপত্য স্থাপনের কোন সুপরিকল্পিত উদ্দেশ্য ছিল না। তার অভিযানগুলির মূল প্রেরণা ছিল ভারতের লুন্ঠন। কিন্তু মুহাম্মাদ ঘুরি অভিযানগুলি আরো উচ্চতরের সুপরিকল্পিত উদ্দেশ্যে দ্বারা পরিচালিত হয়েছিল। তিনি স্বপ্ন দেখতেন, ভারত জয়ের সাফল্যমন্ডিত সামরিক অভিযান, শিয়াল কোটের দুর্গ নির্মাণ প্রভৃতি তাঁর উচ্চমানের পরিচয় দেয়।
দ্বিতীয়ত- ভারতের রাজনৈতিক দুর্বলতা উভয়ই লক্ষ্য করেছিলেন। সুলতান মামুদ এই দুর্বলতার সুযোগ গ্রহণ করেছিলেন। তার ধনলিপ্সা, ধর্মান্ধতা প্রভৃতি প্রবৃত্তিগুলো চরিতার্থ করার জন্য ভারত আক্রমণ করেছিলেন, ধর্ম প্রচার করার জন্য নয়। কিন্তু অন্যদিকে মুহাম্মাদ ঘুরি সেই সুযোগ গ্রহণ করেছিলেন স্থায়ীভাবে মুসলমান সাম্রাজ্যের ভিত্তি রচনা করার জন্য এবং ভবিষ্যতে তা ধর্ম প্রচারের ক্ষেত্রে প্রস্তুত করে।
তৃতীয়ত- তবে একথা সত্য যে, সুলতান মাহমুদের অভিযান গুলির দ্বারা ভারতের অর্থনৈতিক ও সামরিক দুর্বলতা প্রকট হয়েছিল।
মুহাম্মাদ ঘুরি শুধুমাত্র রাজ্য জয় করে ক্লান্ত হয়নি, বিজিত রাজ্যগুলির শাসন ব্যবস্থার প্রতিও দৃষ্টি দিয়েছিলেন। সামরিক বিভাগে যদিও মুসলমান কর্মচারীগণ নিযুক্ত হতেন, আবার কিছু বেসামরিক বিভাগেও তিনি হিন্দুদের নিযুক্ত করতেন। তার এই শাসন নীতির ফলে ভারতে মুসলিম শাসন স্থায়ি রূপ লাভ করতে সমর্থ হয়নি। তাই ভারতবর্ষে মুসলিম শাসনের ইতিহাসে মুহাম্মদ ঘুরির অবদান সুলতান মাহমুদ এর তুলনায় অনেক বেশি ছিল। উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত অঞ্চল ও পাঞ্জাবের কিছু অংশ দখল করলেও তিনি ভারতের অভ্যন্তরে পরাজিত হিন্দু রাজ্যগুলিকে নিজ সাম্রাজ্যভুক্ত করার কোনো আগ্রহ তার ছিল না। তাই ভারতীয়দের দৃষ্টিতে তিনি ছিলেন একজন লুন্ঠনকারি মাত্র, সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠাকারী নন।
তবে একথা স্বীকার করতেই হবে যে, সুলতান মাহমুদ শিল্প, সাহিত্য, ধর্ম প্রভৃতি পৃষ্ঠপোষকতা করে ভারতবর্ষের ইতিহাসে চির অমর রয়েছেন। আলবেরুনী প্রভৃতি খ্যাতনামা কবি, ঐতিহাসিক ও সাহিত্যিক তার রাজ্যসভা অলংকৃত করতেন। গজনীর বিশ্ববিদ্যালয় ও গ্রন্থাগার প্রভৃতি স্থাপনের মামুদ এর কৃতিত্বব বিশেষভাবে স্মরণ করা যায়। কিন্তু এসব ক্ষেত্রে মুহাম্মদ ঘুরির বিশেষ কোনো অবদান নেই।
তথ্যসূত্র
- সুনীল চট্টোপাধ্যায়, "প্রাচীন ভারতের ইতিহাস"
- Ashok. K Banker, "Ashoka: Lion of Maurya".
- Wytze Keuning, "Ashoka the Great".
সম্পর্কিত বিষয়
- চোল রাজ্যের প্রশাসনিক ব্যবস্থা (আরো পড়ুন)
- জুনাগড় লিপি (আরো পড়ুন)
- কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্রের গুরুত্ব (আরো পড়ুন)
- জৈন ধর্মের বৈশিষ্ট্য (আরো পড়ুন)
সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ| আশাকরি আমাদের এই পোস্টটি আপনার ভালো লাগলো| আপনার যদি এই পোস্টটি সম্বন্ধে কোন প্রশ্ন থাকে, তাহলে নিচে কমেন্টের মাধ্যমে আমাদেরকে জানাতে পারেন এবং অবশ্যই পোস্টটি শেয়ার করে অপরকে জানতে সাহায্য করুন|
.......................................