কোম্পানির কর্তা ব্যক্তি হলওয়েল প্রচার করেছিলেন যে, কলকাতা দখল করে সিরাজ 146 জন নর-নারীকে একটি ছোট ঘরে বন্দি করে রেখেছিলেন। সারারাত প্রচণ্ড গরমে শ্বাসকষ্টের ফলে পরের দিন দেখা যায় তাদের মধ্যে 123 জন মারা যায়। এই মর্মান্তিক ঘটনাটিকে অন্ধকূপ হত্যা বলা হয়।
Source- click here |
সময়কাল
1756 খ্রিস্টাব্দ 20 শে জুন তারিখে অনুষ্ঠিত একটি আলোচিত ঘটনা।
বন্দিঘরের বিবরণ
সিরাজ তাদের সকলকে একটি ছোট্ট জানালা বিশিষ্ট 18 ফুট লম্বা ও 14 ফুট 10 ইঞ্চি চওড়া একটি কক্ষে বন্দিদের রাখা হয়েছিল।
কাল্পনিক কাহিনী
পরবর্তীকালে প্রমাণিত হয়েছে যে, এই ঘটনা আদৌ সত্য নয়। বাস্তবে এতো ছোট একটি ঘরে 146 জন ইংরেজকে কোনভাবেই প্রবেশ করানো সম্ভব না। কারণ একজন মানুষের জন্য অত্যন্ত 6 ফুট দৈর্ঘ্য 2 ফুট প্রস্থ এবং 2 ফুট বেধ সমন্বিত জায়গা প্রয়োজন। এই ছোট ঘরে যেখানে 81 জনের বেশী মানুষ ঠাসাঠাসি করেও থাকতে পারে না, সেখানে 146 জন মানুষ থাকতে পারবে কী না সন্দেহ আছে ?
অল্পসংখ্যক অবশিষ্ট ইংরেজকে তথাকথিত অন্ধকূপে আটকে রাখতে পারে।
স্পিয়ার এর বক্তব্য:- তিনি বলেন যে, হলওয়েলের যুক্তিতে অতিরঞ্জন থাকলেও কলকাতা রক্ষার জন্য নিয়োজিত 123 জন ইউরোপীয় সৈন্যেরা হিসাবে দেখাতেই হয়। সে কারণে এই সকল সৈন্যেরা অন্ধকূপের মৃত্যুর চেয়ে যুদ্ধে নিহত হওয়ার সম্ভাবনা অপেক্ষাকৃত ক্ষীণ।
সমালোচকদের অভিমত
- গবেষক অক্ষয় কুমার মৈত্র মনে করেন যে, অন্ধকূপ হত্যায় মৃত ইংরেজদের যে তালিকা হলওয়েল প্রকাশ করেন তাদের মধ্যে অনেকেই আগে মারা গিয়েছিলেন এবং অনেকেই পরে জীবিত ছিলেন।
- শ্রীমতি অ্যানি বেসান্ত এ বিষয়ে মত প্রকাশ করে বলেছেন যে, “জ্যামিতি প্রমাণ করেছে যে পাটিগণিতের অংক ভুল"।
তথ্যসূত্র
- সুমিত সরকার, "আধুনিক ভারত"
- শেখর বন্দ্যোপাধ্যায়, "পলাশি থেকে পার্টিশন"
- Ishita Banerjee-Dube, "A History of Modern India".
সম্পর্কিত বিষয়
লেখক পরিচিতি
নাম- সুমন মোহন্ত কলেজের নাম- নেতাজি মহাবিদ্যালয় (২ সেমিস্টার, ইতিহাস অনার্স) ঠিকানা- আরামবাগ, মায়াপুর, পিন কোড- ৭১২৪১৩ |
সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আশাকরি আমাদের এই পোস্টটি আপনার ভালো লাগলো। আপনার যদি এই পোস্টটি সম্বন্ধে কোন প্রশ্ন থাকে, তাহলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করে জানাতে পারেন এবং অবশ্যই পোস্টটি শেয়ার করে অপরকে জানতে সাহায্য করুন।