মুঘল আমলে কোন পরগনা ছিল না, সেখানে জমিদার ছিল। ঐতিহাসিক নুরুল হাসান ও ইরফান হাবিব এর মতে, মুঘল ভারতে তিন প্রকার জমিদার ছিল, যথাক্রমে- ১.সামন্ত মহারাজা, ২.মধ্যস্বত্বভোগী জমিদার, ৩.প্রাথমিক জমিদার বা মালগুজারি জমিদার।
মালগুজারি জমিদার
জমিদারদের মধ্যে একেবারে নিচের স্তরে ছিলো প্রাথমিক বা প্রান্তিক জমিদারগণ। গ্রাম বা জমি জরিপের ভিত্তিতে এদের উপর রাজস্ব নির্ধারণ হতো বলে এরা মালগুজারি বা মালওয়াজিব নামে পরিচিত ছিলো।
জমির উপর এদের একটা স্বতন্ত্র স্বত্ব ছিল। এদের অনেকেই ছিলেন কৃষক মালিক অর্থাৎ নিজেরাই জমি চাষাবাদ করতেন। আবার অনেক সময় মজুর দিয়ে চাষ করিয়ে নিতেন। একটি বা একাধিক গ্রামের উপরেও এদের মালিকানা ছিল, এক কথায় দেশের সমস্ত কৃষি জমি ছিল কোন না কোন প্রাথমিক জমিদারের অধিকারে, এই অধিকার ছিল বংশগত বা হস্তান্তরযোগ্য।
শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা বা সৈন্য জোগান দেওয়া ছিল এদের প্রধান কাজ। এদের একদিকে ছিল উর্ধতম জমিদার শ্রেণী ও রাজস্ব আয়, অন্যদিকে ছিল কৃষক। এই অবস্থার মধ্যে থেকেও এরা নিজেদের অবস্থার উন্নতি ঘটানো চেষ্টা করত। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ চাপ দিলে এরা কৃষকের কাঁধের উপর করের বোঝা চাপাতো। অর্থনৈতিক শোষণের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের পক্ষ নিয়ে এরা আবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বা মুঘল রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করতো। অনেক সময় মধ্যস্বত্বভোগী জমিদাররা এদের দমন করে উপমালিকানার সৃষ্টি করতো।
📝তথ্যসূত্র
- সতীশ চন্দ্র, "মধ্যযুগে ভারত"।
- শেখর বন্দ্যোপাধ্যায়, "অষ্টাদশ শতকের মুঘল সংকট ও আধুনিক ইতিহাস চিন্তা"।
- অনিরুদ্ধ রায়, "মুঘল সাম্রাজ্যের উত্থান-পতনের ইতিহাস"।
📝সম্পর্কিত বিষয়
- ভারতবর্ষে মুঘল বা মোগল সাম্রাজ্যের প্রকৃতি ও কার্যাবলীর সংক্ষিপ্ত আলোচনা (আরো পড়ুন)।
- মনসবদারি ব্যবস্থা এবং পরবর্তীকালে জায়গির সংকট (আরো পড়ুন)।
- মুঘল আমলে বাংলার সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থা (আরো পড়ুন)।
সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আশাকরি আমাদের এই পোস্টটি আপনার ভালো লাগলো। আপনার যদি এই পোস্টটি সম্বন্ধে কোন প্রশ্ন থাকে, তাহলে নিচে কমেন্টের মাধ্যমে আমাদেরকে জানাতে পারেন এবং অবশ্যই পোস্টটি শেয়ার করে অপরকে জানতে সাহায্য করুন।🙇♂️
...............................