বিজয়নগর রাজ্যের তৃতীয় রাজবংশ তুলুক বংশের অন্যতম শাসক কৃষ্ণদেব রায় ছিলেন বিজয় নগরের সর্ব শ্রেষ্ঠ শাসক।
কৃষ্ণদেব রায় Source - click here |
নরাসিংহের ভ্রাতা কৃষ্ণদেব রায় ১৫০৯ খ্রিস্টাব্দে সিংহাসন আরোহন করেন। তাঁর খ্যাতি শুধুমাত্র দক্ষিণ ভারতের সীমাবদ্ধ ছিল না, তিনি সমগ্র ভারতের ইতিহাসে অন্যতম খ্যাতি নাম বীরপুরুষ তার রাজত্বের অধিকাংশ সময় তিনি যুদ্ধে লিপ্ত ছিলেন। বিদ্রোহী সামন্তদের বিরুদ্ধে অগ্রসর হয়ে তিনি উত্তমপুরে সামন্তকে পরাজিত করেন। অন্যান্য সামন্তরা তার আনুগত্য স্বীকার করেন। ১৫১২ খ্রিস্টাব্দে বিজয়পুরের সুলতানের কাছ থেকে রায়চুর অধিকার তার অন্যতম কৃতিত্ব। উড়িষ্যার কোটিপতি প্রতাপ রুদ্রের বিরুদ্ধে অগ্রসর হয়ে তিনি ১৫১৪ খ্রিস্টাব্দে উদয়গিরি অধিকার করেন।
এরপর ক্রমে ক্রমে কোন্ডাভিন্ডু, বেজোয়াদা তাঁর অধীনে আসে এবং সীমা লেম পর্যন্ত তার ক্ষমতা বিস্তৃত হয়। কৃষ্ণদেব রায় রাজত্বকালে বিজয়নগর উন্নতির চরম শীর্ষে আরোহন করেছিল। সাম্রাজ্যের সীমা এই সময় কঙ্কন থেকে বিশাখাপত্তনম এবং সুদূর দক্ষিণ পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছিল কৃষ্ণদেব রায় পর্তুগিজদের সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্ক রক্ষা করে চলতেন।
কৃষ্ণদেব রায় কেবলমাত্র অসামান্য নিপুন নরপতি ছিলেন না। একজন সর্বগুণ চিহ্নিত শাসকও ছিলেন। শাসক হিসেবে তিনি মহান এবং ন্যায় সুবিচারক ছিলেন। সমসাময়িক পর্তুগিজ পর্যটক পা এস (Pa-es) লিখেছেন যে, তিনি একজন শ্রেষ্ঠ রাজা ছিলেন ও তার যথেষ্ট ন্যায় পরায়নত্ব ছিল। পাণ্ডিত্য উদারতা, শিল্পানুরাগ ও বিদ্যুৎসাহিত তাঁর সমকক্ষ নরপতি দক্ষিণ ভারতে আর কেউ ছিল না।
তিনি ধর্মীয় বিশ্বাসে বৈষ্ণব হয়েও সকল ধর্মীয় সম্প্রদায়ের প্রতি সহানুভাব পোষন করতেন। কৃষ্ণদেব রায় বিজয় নগরের সাংস্কৃতিক উন্নতির জন্য সচেষ্ট ছিলেন। তাঁর লিখিত গ্রন্থ আমুক্তমাল্যদা তেলেগু সাহিত্যের একটি অমূল্য সম্পদ। তৎকালীন যুগে কৃষ্ণদেব রায়ের এই পতিপত্তি ভারতবর্ষের ইতিহাসের অন্যতম প্রধান ঘটনা। প্রকৃতপক্ষে তাঁর রাজত্বকালের বিজয়নগর রাজ্য উন্নতি ও গৌরবময়ের চরম শীর্ষে পৌঁছায়।
............. সমাপ্তি...........
✍️লেখিকা পরিচিতি
👉তথ্যসূত্র
- সতীশ চন্দ্র, "মধ্যযুগে ভারত"।
- অনিরুদ্ধ রায়, "মুঘল সাম্রাজ্যের উত্থান-পতনের ইতিহাস"।
- V D Mahajan, "History of Medieval India".
📖সম্পর্কিত বিষয়
- মধ্যযুগীয় ভারতের ভক্তি আন্দোলনের উদ্ভব (আরও পড়ুন)।
- ভারতবর্ষে মুঘল বা মোগল সাম্রাজ্যের প্রকৃতি ও কার্যাবলীর সংক্ষিপ্ত আলোচনা (আরো পড়ুন)
- মনসবদারি ব্যবস্থা এবং পরবর্তীকালে জায়গির সংকট (আরো পড়ুন)।
সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আশাকরি আমাদের এই পোস্টটি আপনার ভালো লাগলো। আপনার যদি এই পোস্টটি সম্বন্ধে কোন প্রশ্ন থাকে, তাহলে নিচে কমেন্টের মাধ্যমে আমাদেরকে জানাতে পারেন এবং অবশ্যই পোস্টটি শেয়ার করে অপরকে জানতে সাহায্য করুন।