মহম্মদ বিন তুঘলক তাঁর রাজত্বে সূচনাতে এই প্রচলিত মুদ্রা সংস্কার সাধন করে মুদ্রা ব্যবস্থাকে নিখুঁত করবার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তাঁর সর্বাপেক্ষ গুরুত্বপূর্ণ প্রচেষ্টা ছিল প্রচলিত রৌপ্য মুদ্রার পরিবর্তে প্রতীক তাম্র মুদ্রার প্রবর্তন। প্রতীক মুদ্রা ব্যবস্থা প্রবর্তন সুলতান মহম্মদ বিন তুঘলকের অভিনবত্বের একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
মুদ্রা |
চীন এবং পারস্য সম্রাটের অনুকরণের সুলতান ১৩২৯ খ্রিস্টাব্দে তাম্র মুদ্রার প্রচলন করেন। তাঁর এই নতুন ব্যবস্থার প্রধান কারণ ছিল রাজ কোষে অর্থের অভাব এবং সামরিক বিজয়ের জন্য অর্থের প্রয়োজনীয়তা। তাছাড়া এই সময় আন্তর্জাতিক বাজারের রূপোর জোগানও কম ছিল। কিন্তু তাঁর এই সুনিশ্চিত পরিকল্পনা প্রধানত দুটি কারণে ব্যর্থ হয়, সেগুলি হলো -----
👉প্রথমত:- এটি যুগোপযোগী ছিল না। এবং জনসাধারণের গুরুত্ব উপলব্ধি করতে পারেনি।
👉দ্বিতীয়তঃ- তিনি ভাল তাম্র মুদ্রার প্রতিরোধের কোনরূপ ব্যবস্থা অবলম্বন করেননি। এর ফলে ব্যবসায়ীরা ও বৈদেশিক বাণিজ্য নিযুক্ত বণিকগণ তাম্র মুদ্রা নিতে অস্বীকার করতে থাকে।
সুলতান অন্য কোন উপায় না দেখে তাম্র মুদ্রা প্রত্যাহার করে নেন এবং তাম্রমুদ্রার মূল্য অনুযায়ী সোনা ও রুপার দেওয়ার ব্যবস্থা করেন।
এর ফলে রাজ কোষে জাল তাম্র মুদ্রার পাহাড় জমে ওঠে এবং রাজকোষে অর্থ ভাব দেখা দেয়, সুতরাং তার এই প্রচেষ্টাও ব্যর্থ হয়। এখানেও তার ব্যর্থতার কারণ পরিকল্পনা দুর্বলতা অপেক্ষা পরিকল্পনা কার্যকর করার ত্রুটির মধ্যেই নিহত ছিল।
............. সমাপ্তি...........
✍️লেখিকা পরিচিতি
👉তথ্যসূত্র
- সতীশ চন্দ্র, "মধ্যযুগে ভারত"।
- অনিরুদ্ধ রায়, "মুঘল সাম্রাজ্যের উত্থান-পতনের ইতিহাস"।
- V D Mahajan, "History of Medieval India".
📖সম্পর্কিত বিষয়
- মধ্যযুগীয় ভারতের ভক্তি আন্দোলনের উদ্ভব (আরও পড়ুন)।
- ভারতবর্ষে মুঘল বা মোগল সাম্রাজ্যের প্রকৃতি ও কার্যাবলীর সংক্ষিপ্ত আলোচনা (আরো পড়ুন)
- মনসবদারি ব্যবস্থা এবং পরবর্তীকালে জায়গির সংকট (আরো পড়ুন)।
সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আশাকরি আমাদের এই পোস্টটি আপনার ভালো লাগলো। আপনার যদি এই পোস্টটি সম্বন্ধে কোন প্রশ্ন থাকে, তাহলে নিচে কমেন্টের মাধ্যমে আমাদেরকে জানাতে পারেন এবং অবশ্যই পোস্টটি শেয়ার করে অপরকে জানতে সাহায্য করুন।