ভিয়েতনামের মুক্তি সংগ্রামের ইতিহাসে নোবিয়েন আই কুয়ো অরফে হো-চিন-মিন অসাধারণ সংগঠনিক শক্তি গভীর দেশ প্রেম সুদোস নেতৃত্ব ও বিপ্লবের মধ্য দিয়ে ভিয়েতনামের সাফল্য নিয়ে আসেন।
হো-চিন-মিন |
👉ওয়াকার্স পার্টি গঠন
হো-চিন-মিন প্রচন্ড সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী ছিলেন। ফরাসি সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে তিনি "ভিয়েতনাম ওয়াকার্শ পার্টি" গঠন করেন। ইতি পরবর্তীকালে "ভিয়েতনাম কমিউনিস্ট" পার্টি নামে পরিচিত।
👉সাম্রাজ্যবাদের নেতৃত্ব দান
হো-চিন-মিন শহরের একটি ছবি |
সাম্রাজ্যবাদী আদর্শে বিশ্বাসী এক কমিউনিস্ট নেতা ছিলেন হো-চিন-মিন । তিনি কৃষক ও শ্রমিকদের সংবদ্ধ করেন। হিন্দু জিনিস সকল শ্রমিক জিবি মানুষকে নিয়ে তিনি "সাম্যবাদী আন্দোলন" এর সূচনা করেন। এই বিদ্রোহ ফরাসি সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে ভিয়েতনাম বাসীর প্রথম বিদ্রোহ।
👉ভিয়েতমিন গঠন
ভিয়েতনামের কমিউনিস্ট ও জাতীয়তাবাদীদের নিয়ে ১৯৪১ খ্রিস্টাব্দে হো-চি-মিন গঠন করেন। এই সংগঠন সাম্রাজ্য ও জাতীয়তাবাদের মেলবন্ধন ঘটায়।
👉গরিলা বাহিনী গঠন
হো-চি-মিন স্বাধীনতার আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে যুবকদের নিয়ে লুগেয়েন গিয়াপের সহযোগিতায় একটি সৈন্যবাহিনী গড়ে তোলেন। এই বাহিনীর সদস্যরা গরিলা যুদ্ধে বিশেষ পারদর্শী ছিল।
👉জাপানি এর বিরুদ্ধে সংগ্রাম
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপান ফ্রান্সকে পরাজিত করে ইন্দো চীন অধিকার করে। তাই হো-চি-মিন এর সংগ্রাম জাপানের বিরুদ্ধে শুরু হয়। জাপান দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে পরাজিত হয়ে আত্মসমর্পণ করেন। ইন্দোচিনসহ সমস্ত দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া থেকে তারাও শৈন্যবাহিনী প্রত্যাহার করে নেয়। এই সুযোগে হো-চি-মিন হ্যানয় দখল করেন।
👉ভিয়েত নামের প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠা
হো-চি-মিন হ্যানয়ে ভিয়েতনাম গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন। হো-চি-মিন হাতে উত্তর ভিয়েতনাম তুলে দেই। কিন্তু ব্রিটিশ দক্ষিণ ভিয়েতনাম ফ্রান্সের হাতে তুলে দিলে ভিয়েতনামে পুনরায় ফরাসি আধিপত্য স্থাপনের সুযোগ তৈরি হয়। হো-চি-মিন এর দৃঢ়চার জন্য ফ্রান্স ভিয়েত মেনে সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করতে বাধ্য হয় এবং এই চুক্তিকে ফ্রান্স ভিয়েতনামকে ইন্দোচীন ফ্রেডারেশন ও ফরাসি ইউনিয়নের অংশ হিসেবে মেনে নেয়।
👉ফরাসি আক্রমণ প্রতিরোধ
ভিয়েতমিনদের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করলেও ফ্রান্স সমগ্র ইন্দোচীনে নিজের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করার জন্য সৃষ্টি হয়। তাই ফ্রান্স ভিয়েতনামে বোমা বর্ষণ করেন। তাই শুরু হয় "ভিয়েতনাম যুদ্ধ"।
👉চীন ও রাশিয়ার সাহায্যে লাভ
মাও সে তুং এর নেতৃত্বে চিনে সাম্যবাদী সরকার ভিয়েতমিন সরকারকে স্বীকৃতি দেয়। তাই ইন্দোচিন ঠান্ডা লড়াইয়ে প্রধান কেন্দ্রের পরিণত হয়। হো-চি-মিন চিন ও সোভিয়েত রাশিয়া এবং অন্যদিকে ফ্রান্স মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন লাভ করে।
👉ফ্রান্সের পরাজয়
ইন্দো চিনে ফরাসি শাসনের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধে একটি আন্তর্জাতিক সমস্যা সৃষ্টি হয়। হো-চি-মিন, লেদওয়ান ও সেনাপতি জিয়াপের নেতৃত্বে ভিয়েতনামবাসী দ্রুত জয়লাভের পথে অগ্রসর হয়। এবং একের পর এক ফরাসি ঘাঁটির পতন হতে থাকে। ফ্রান্সের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি দিয়েন-ভিয়েন-ফুঁ পতন হওয়ায় ভিয়েতনামে ফরাসি শক্তি বিপর্যয় ঘটে।
✍️মূল্যায়ন
পরিশেষে উল্লেখ করা দরকার যে, ১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দে জেনেভায় ইন্দোচিন সমস্যার শান্তির্পূণ সমাধানের জন্য একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন ডাকা হয়। এই সম্মেলনে সিদ্ধান্ত অনুসারে ভিয়েতনাম কে দুটি অংশে বিভক্ত করা হয়। উত্তর ভিয়েতনামে হো-চি-মিন এর নেতৃত্বে ভিয়েতনাম গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পায়। ১৭০ অক্ষরেখার উত্তরে কমিউনিস্ট দলের ভিয়েতমিন সরকার ক্ষমতায় আসে। অন্যদিকে দক্ষিণ ভিয়েতনামে নির্বাচনে মাধ্যমে শান্তিপূর্ণভাবে রাজনৈতিক সমস্যার সমাবেদন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
............. সমাপ্তি...........
✍️লেখিকা পরিচিতি
👉 তথ্যসূত্র
- অমিত ভট্টাচার্য, "চীনের রূপান্তরের ইতিহাস 1840-1969"
- Jonathan Fenby, "The Penguin History of Modern China".
✍️সম্পর্কিত বিষয়
✍️সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আশাকরি আমাদের এই পোস্টটি আপনার ভালো লাগলো। আপনার যদি এই পোস্টটি সম্বন্ধে কোন প্রশ্ন থাকে, তাহলে নিচে কমেন্টের মাধ্যমে আমাদেরকে জানাতে পারেন এবং অবশ্যই পোস্টটি শেয়ার করে অপরকে জানতে সাহায্য করুন🙏।