ঔরঙ্গজেবের রাজপুত নীতি

মুঘল ইতিহাসে এক অতি জটিল ও বিতর্ক নিয়ে বিষয় হল ঔরঙ্গজেবের রাজপুতনীতি। অনুদার নীতি গ্রহণ করে মোগল সম্রাট ঔরঙ্গজেব রাজপুতদের মোগল বা মুঘল বিরোধী করে তোলেন। মুঘল সম্রাট ঔরঙ্গজেবের রাজপুত নীতির মধ্যে পরে মারওয়ার মেবার জোট, মেবার আক্রমণ, আকবরের সাথে বিদ্রোহ, মারওয়ার সাথে সন্ধি, মেবারের সাথে সন্ধি, রাজপুতদের আবেদন, জয় সিংহের মৃত্যু, মারওয়ার দখল তাছাড়া রাজনৈতিক কারণ এবং উদ্দেশ্য তো রয়েছেই। 

কিছু ঐতিহাসিকেরা মনে করেন, রাজপুতদের মুঘল সাম্রাজ্যের শত্রুতে পরিণত করেন যখন ভারতে ঐস্লামিক ধর্মাতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংকীর্ণ নীতি গ্রহণ করে  এবং আকবরের উদারনীতি থেকে বিচ্যুতি সম্রাট ঔরঙ্গজেব  হন। হিন্দু সমাজে রক্ষক ও নেতা ছিল প্রবল সামরিক ও রাজনৈতিক ক্ষমতার অধিকারী ছিল রাজপুতরায়। 

ঔরঙ্গজেবের রাজপুত নীতি
মুঘল সাম্রাজ্যের মানচিত্র, Source- (check here)



👉উদ্দেশ্য

হিন্দু ধর্ম ও সমাজবিরোধী আইন গুলি কার্যকর করার পথে মোঘল সম্রাট ঔরঙ্গজেবের প্রধান অন্তরায় রাজপুত রায় ছিল। ফলে ঔরঙ্গজেব উদ্যোগী হন এবং রাজপুত শক্তি মেরুদন্ড ভেঙ্গে দিয়েছিলেন। মোগল সম্রাট ঔরঙ্গজেব মোগল সাম্রাজ্যের ঘোরতর শত্রুতে ধর্মীয় সংকীর্ণতা দ্বারা পরিচালিত হয়ে পরিণত করেন ।



👉রাজনৈতিক কারণ 

মুঘল সম্রাট ঔরঙ্গজেবের রাজপুতদের অন্তর্দ্বন্দ্ব বিদ্যমান এবং রাজপুতনীতিদের পশ্চাতে বিভিন্ন রাজনৈতিক কারণ ছিল। হিন্দু বিরোধী নীতি নয় বা নিছক ধর্মীয় সংকীর্ণতা - সম্প্রতিকালে প্রমাণ করতে চেষ্টা করেছেন ডঃ মোহাম্মদ আতার আলী ডঃ সতীশচন্দ্র এবং ডঃ ভার্গব। 



👉রাজা জয় সিংহের মৃত্যু

মুঘল দরবারের দুজন প্রভাবশালী সামন্ত ছিলেন যারা হলেন মারওয়ার রাজ যশোবন্ত সিংহ এবং অম্বরের রানা জয় সিংহ। জয় সিংহকে শিবাজীর বিরুদ্ধে নিয়োগ করে মোগল সম্রাট ঔরঙ্গজেব যথেষ্ট সুলভ লাভ করেন। মুঘল অধিকারের শিবাজীর বহুদূর্গ জয় সিংহ অধিকারে নিয়ে আসেন। ১৬৬৫ খ্রিস্টাব্দে শিবাজী পুরন্দরের সন্ধিও জয়সিংহের উদ্যোগেই স্বাক্ষরে বাধ্য হয়। বেশ কিছুদিন পর বিজয়পুরের বিরুদ্ধে জয়সিংহকে নিয়োগ করেন এবং বিষ প্রয়োগে সেখানে তাকে হত্যা করা হয়। জয়সিংহকে বিষ প্রয়োগে হত্যার কারণ হিসেবে মোগল সম্রাট ঔরঙ্গজেবের হাত দেখতে পাওয়া পায় রাজপুত সেনাপতিদের মধ্যে কিছু সেনাপতিগণ এবং সচকিত হয়ে ওঠেন রাজপুর সেনাপতিগণ। 




👉মারওয়ার দখল 

ঔরঙ্গজেবের রাজপুত নীতি

এরপর যশোবন্ত সিংহের দিকে মারওয়ার দখলের জন্য মুঘল সম্রাট ঔরঙ্গজেব নজর দেন। মুঘল সম্রাট ঔরঙ্গজেবের পক্ষে সহ্য করা সম্ভব ছিল না রাজপুতানার মধ্যবর্তী স্থানে শোষিত শক্তিশালী মারওয়ার রাজ্যের অস্তিত্ব। মারওয়ার নিয়ন্ত্রণে দিল্লির সঙ্গে পশ্চিম ভারতের বন্দরগুলির যোগাযোগের পথ ছিল। তাছাড়া মুঘল সম্রাট ঔরঙ্গজেব  যথেষ্ট সন্দিদ্ধ ছিলেন মারওয়ার অধিপতি যশোবন্ত সিংহ সম্পর্কে। 


যশোবন্ত সিংহ মুঘল সম্রাট ঔরঙ্গজেবের পক্ষ যোগদানের আগে উত্তরাধিকার যুদ্ধের সময় একটি পর্বে যশবন্ত সিংহ একনিষ্ঠ সমর্থক ছিলেন। তাই মোগল সম্রাট ঔরঙ্গজেব দিল্লি থেকে বহু দূরে জামরুদের উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত রক্ষার কাজে যশোবন্ত সিংহকে নিয়োগ করেন। সেখানে যশবন্ত সিংহের রহস্যজনকভাবে ১৬৭৮ খ্রিস্টাব্দে ২৮ শে নভেম্বর-এ যশোবন্ত সিংহের মৃত্যু ঘটে এবং ১৬৭৯ খ্রিস্টাব্দে মারুয়ার দখল করে মোগল সেনাবাহিনী বিনা কোন বাধায়। জনৈক্য ইন্দোর সিংহ কে মারওয়ারের রাজা বলে ৩৬ লক্ষ টাকার বিনিময়ে ঔরঙ্গজেব ঘোষণা করেন। কিছু কর্মচারী নিয়োগ করে সেখানে মোঘল শাসন কায়েম করা হয় যেমন মুসলিম ফৌজিদার, কেল্লাদার, কোতআল, আমিন প্রভৃতি কর্মচারী। মোগল সম্রাট নেতৃত্বে সেখানে হিন্দুদের ওপর জিজিয়া কর চাপানো হয় এবং সেখানে বহু হিন্দু মন্দির ধ্বংস করা হয়। অমর সিংহের জৈষ্ঠ ভ্রাতা অমর সিংহের পৌত্র ছিলেন ইন্দো সিংহ দুই পরিবারের মধ্যে যথেষ্ট শত্রুতা ছিল। 




👉রাজপুতদের আবেদন 

যশোবন্ত সিংহের দুই পত্নী সন্তান সম্ভাবা ছিলেন যখন যশোবন্ত সিংহের মৃত্যু হয় । তাঁরা দুটি সন্তান প্রসব করলেন যশোবন্ত সিংহের মৃত্যুর পর তারপর পরিস্থিতি নতুন মোর নেই। এক সন্তানের জন্মের কয়েকদিন পর মৃত্যু হয় এবং জীবিত থাকে অপর পুত্রটি। অজিত সিংহ তার নাম রাখা হয়। রাঠোর বংশীয় রাজপুত যশোবন্ত সিংহের অনুগামী  বীর দুর্গা দাস শিশু পুত্র অজিত সিংহকে নিয়ে ও যশোবন্ত সিংহের দুই বিধবা পত্নীকে নিয়ে দিল্লিতে উপস্থিত হন এবং অনুরোধ জানান অজিত সিংহকে তার পিতৃ রাজ্যের প্রতিষ্ঠিত করার। 


যশোবন্ত সিংহের পুত্র অজিত সিংহকে মোগল সম্রাট ঔরঙ্গজেব মোগল হারেমে প্রতিপালিত হবেন এবং মারওয়ার সিংহাসনে বসানো হবে যখন অজিত সিংহ সাবালকত্ব অর্জন করবেন, উত্তরে জানান মুঘল সম্রাট ঔরঙ্গজেব। মোগল সম্রাট ঔরঙ্গজেব অজিত সিংহকে তার পিতৃ রাজ্য ফিরিয়ে দিতে সম্মত হন যখন অজিত সিংহের ইসলাম ধর্ম গ্রহণের শর্ত মেনে নেই, মুঘল সম্রাট ঔরঙ্গজেব অপর একটি মত অনুসারে একথা বলা যায়। যাইহোক না কেন, দুর্গাদাস এই প্রস্তাবকে ঘৃণা চোখে দেখলে এবং প্রত্যাখ্যান করে দিল্লি ত্যাগ করার উদ্যোগ গ্রহণ করেন তাই মোগল সম্রাট ঔরঙ্গজেব দুই রানীকে এবং শিশুঅজিত সিংহ বন্দী করেন। রাঠোর বীর দুর্গা দাস রাজধানী যোধপুরে ফিরিয়ে আনেন দুই রানী ও অজিত সিংহকে, রাঠোর বীর দুর্গা দাস তার বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে এই দুই রানী ও অজিত সিংহকে উদ্ধার করেছিলেন। 



👉মারওয়ার মেবার জোট 

ক্রুদ্ধ হয়ে মুঘল সম্রাট ঔরঙ্গজেব তার পুত্র আজম মুয়াজ্জম আকবর নেতৃত্ব নিয়ে ত্রিমুখী অভিযান শুরু করেন মারওয়ারের বিরুদ্ধে  এবং আজমিরে উপস্থিত হন মোগল সম্রাট ঔরঙ্গজেব নিজে। যোধপুর সহ বড় বড় শহরে লুন্ঠন চালায় মোগল সেনাবাহিনী এবং বহু হিন্দু মন্দির ধ্বংস করেন। তারপর সেই হিন্দুদের ধংস মন্দিরগুলির জায়গায় গুলি মসজিদে পরিণত করেন। মেবারে শিশোদিয় রাজবংশের কন্যা ছিলেন অজিত সিংহের মা। অজিত সিংহের মা মেবার রাজ রাজসিংহের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করেন। মেবার ও মোগল আগ্রাসনের হাত থেকে রক্ষা পাবে না যদি মারওয়ার পতন ঘটে এই ভাবনাটি রাজ সিংহ সঠিকভাবে উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন। মোগল সম্রাট ঔরঙ্গজেবের ওপর রাজসিংহ পূর্ব থেকেই খুব্ধ ছিলেন কারণ মোগল সম্রাট ঔরঙ্গজেব মেবারে জিজিয়া কর আরোপের নির্দেশ দিয়েছিলেন। এমন অবস্থায় মেবার মারওয়ার যুগ্ম প্রতিরোধ গড়ে ওঠে মুঘলদের বিরুদ্ধে এবং শুরু হয় যুদ্ধের প্রস্তুতি।



👉মেবার আক্রমণ

ঔরঙ্গজেবের রাজপুত নীতি

মুঘল সম্রাট ঔরঙ্গজেব প্রথমেই মেবারের ওপর আক্রমণ হানেন কারণ রাজ সিংহের মনোভাব মোগল সম্রাট ঔরঙ্গজেব বুঝতে পেরেছিলেন। গেরিলা যুদ্ধকৌশল অবলম্বন করেন, মোগল সম্রাট ঔরঙ্গজেবের আক্রমণে বিপর্যস্ত হয়ে রাজসিংহ সম্মুখ যুদ্ধ পর ত্যাগ করার পর। ১৬৮০ খ্রিস্টাব্দে আরাবল্লীর পার্বত্য অঞ্চলে আত্মরক্ষার জন্য রাজসিংহ আশ্রয় গ্রহণ করেন। প্রায় ২০০ মন্দির ধ্বংস করে বিশাল মোগল সেনাবাহিনী এবং উদয়পুর ও চিত্তর জয় করে। মোগল সম্রাট ঔরঙ্গজেব  আজমীর জয়ের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেন এবং মেবার জয় সম্পূর্ণ করে পুত্র আকবরের ওপর মেবারের দায়িত্ব অর্পণ করেন। মেবারের গেরিলা বাহিনী মোগল সম্রাট ঔরঙ্গজেবের অনুপস্থিতিতে অতর্কিত আক্রমণ চালিয়ে মোগল সেনাবাহিনীকে ব্যতিব্যস্ত করে তোলে। ফলস্বরূপ ক্ষুব্ধ হয়ে মোগল সম্রাট ঔরঙ্গজেব তিরস্কার করে পুত্র আকবরকে। এবং সরিয়ে দেন মেবারের থেকে মার ওয়ারে। আজম পুত্রের ওপর মোগল সম্রাট ঔরঙ্গজেব মেবারে দায়িত্ব অর্পণ করেন।




👉পুত্র আকবরের বিদ্রোহ 

ঔরঙ্গজেবের রাজপুত নীতি

প্রচন্ড অপমানিত বোধ করেন মুঘল সম্রাট ঔরঙ্গজেবের পুত্র আকবর এবং পুত্র আকবর যোগ দেন বিদ্রোহী রাজপুতদের সঙ্গে। ১৬৮১ খ্রিস্টাব্দের ১১ই জানুয়ারি মোগল সম্রাট ঔরঙ্গজেবের পুত্র আকবর হিন্দুস্তানের বাদশা বলে নিজেকে ঘোষণা করেন বিদ্রোহী রাজপুতদের সহযোগিতায়। 

মুঘল সম্রাট ঔরঙ্গজেব খুবই বিব্রত বোধ করেন পুত্র আকবরের বিদ্রোহ করার জন্য  এবং বিদ্রোহী রাজপুতদের সঙ্গে পুত্র আকবরের বিচ্ছেদ ঘটাতে সচেষ্ট হন মোগল সম্রাট ঔরঙ্গজেব কুটকৌশলের মাধ্যমে। পিতার নির্দেশে এই আকবরের সঙ্গে মিত্রতা করেছে এবং পিতার বিরুদ্ধে বিদ্রোহের অভিনয় করেছেন। যাতে সেটি রাজপুত্রদের হাতে পড়ে এমন ভাবেই চিঠিতে পাঠানো হয়েছিল, যেন চিঠিতে সহজেই পড়ে মনে হয় যে এটি মোগল সম্রাট পিতা ঔরঙ্গজেবের অনুমতি ছিল। জেনেও মনে হয় এটি সিদ্ধ হয় মোগল সম্রাট ঔরঙ্গজেবের উদ্দেশ্যে। পুত্র আকবরের পক্ষ ত্যাগ করে রাজপুতরা এবং বুঝতে পারেন দুর্গাদাস আসর ব্যাপারটা। দুর্গাদাস আকবর পুত্রকে শিবাজীর পুত্র শম্ভুজির দরবারে নিজ দায়িত্বে পৌঁছে দেন। এরপর ১৬৬১ খ্রিস্টাব্দে পুত্র আকবর পারস্যে পলায়ন করেন যখন রাজপুতানায় মোটামুটি একটি ব্যবস্থা করে পুত্র আকবরকে শায়েস্তা করার জন্য মোগল সম্রাট ঔরঙ্গজেব দাক্ষিণাতো যাত্রার উদ্যোগ করেন। এবং ভগ্নহৃদয়ে ১৬০৪ খ্রিস্টাব্দে প্রান ত্যাগ করেন। 



👉মেবার এবং ঔরঙ্গজেবের সন্ধি 

মুঘল সম্রাট ঔরঙ্গজেব মেবাদের সন্ধি ব্যাপারে উদ্যোগী হন বিদ্রোহী পুত্র আকবরকে দমনের উদ্দেশ্যে। ইতিমধ্যে ১৬৮০ খ্রিস্টাব্দে ২২ শে অক্টোবর অর্থাৎ মেবার রাজ সিংহের মৃত্যুর পর মেবারের সিংহাসনে রাজ সিংহের পুত্র জয় সিংহকে বসানো হয়। দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধের ফলে মেবারে কৃষি উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় সেখানে প্রবল খাদ্য অভাব দেখা দেয় তাই জয়সিংহও এই সংগ্রামের অবসান চাইছিলেন। তাছাড়া জয় সিংহের সামরিক শক্তিও কমে গিয়েছিল। এমন অবস্থায় মোগল সেনাপতি শাহজাদা আজমের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে জয়সিংহ এবং ১৬৮১ খ্রিস্টাব্দে ১৪ই জুন শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর করেন।


✍️মেবার এবং মোগল সম্রাট ঔরঙ্গজেবের সন্ধি শর্ত :- 

  1. মেবার ত্যাগ করেন মোগল সেনাবাহিনী। 
  2. মেবারের রানা বলে জয়সিংহ স্বীকৃতি পান এবং মনসবদারের ৫ হাজারি পদে নিয়োগ করা হয়।
  3. প্রত্যায়িত করা হয় মেবার থেকে জিজিয়া কর এবং বিনিময়স্বরূপ তিনটি পরগনা জয় সিংহ মোগলদের হাতে ছেড়ে দেন । 
  4. তিনি তিন লক্ষ টাকা মোগলদের দিতে সম্মত হনা যুদ্ধের ক্ষতি করুন হিসেবে। 
  5. সিদ্ধান্ত দেওয়া হয় যে বিদ্রোহী রাঠোরকে কোন প্রকার সাহায্য বা আশ্রয় দেবেন না। 
  6. মেরামত বা সংস্কার চিতোর দুর্গে কোনভাবেই তিনি করতে পারবেন না।



👉মারওয়ারের সন্ধি 

(১) শান্তি চুক্তিতে মেবার ও মোগল আবদ্ধ হলেও মারওয়ার তার সংগ্রাম অব্যাহত রাখে। বিদ্রোহী পুত্র আকবর মেবারের সঙ্গে শান্তি স্থাপন করে এবং ১৬৮১ খ্রিস্টাব্দে মারাঠাদের দমনে মোগল সম্রাট ঔরঙ্গজেব দাক্ষিণাত্যে রওনা হন। 


(২) উত্তর ভারতে তার পক্ষে আর ফেরা সম্ভব হয়নি ১৭০৭ খ্রিস্টাব্দে তিনি সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। 


(৩) পরবর্তীতে সুদর্শন নয় খ্রিস্টাব্দে মোগল বাদসা প্রথম বাহাদুর শাহ এক চুক্তির দ্বারা মারওয়ারের রানা বলে অরিজিৎ সিংহকে মেনে নেই। ফলস্বরূপ মুঘল মারওয়ার সংঘর্ষে ৩০ বছর ব্যাপী অবসান ঘটে। 




👉রাজপুত নীতির ফলাফল 

সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়নি মুঘল সম্রাট ঔরঙ্গজেবের রাজপুত নীতি। 'চূড়ান্ত রাজনৈতিক অজ্ঞতা' বলে স্যার যদুনাথ সরকার মোগল সম্রাট ঔরঙ্গজেবের রাজপুত নীতিকে অভিহিত করেছেন। বিপর্যয়কারী হল এই যুদ্ধের ফল তিনি এটি বলে ব্যাখ্যা করেছেন। 


(১) এই যুদ্ধের ফলে সাম্রাজ্যের প্রচুর অর্থ বিনষ্ট হয় এবং হাজার হাজার প্রাণ বিনা কারণে রাজপুতানার মরুভূমিতে বলি যায়। 


(২) এই যুদ্ধ প্রচন্ড আঘাত আনে মুঘল মহিমার উপর। মুঘল গরিমা মলান হয়ে যায় মেবারের গিরিকন্দরে ও মারওয়ারের মরুভূমিতে। রাজপুত যুদ্ধ এই ধারণায় পরিবর্তন ঘটায় যে মোগল শক্তি অ-পরাজয়। 


(৩) ডঃ ঈশ্বরী প্রসাদ মনে করেন যে, রাজপুর যুদ্ধ জনসম্পদে নির্গমন ঘটায় ও সাম্রাজে অর্থ এবং সমগ্র হিন্দুস্থানের মুঘল মহিমার বিনষ্ট সাধন করে। 


(৪) ঐতিহাসিক স্যার যদুনাথ সরকার মন্তব্য করেন যে, সাম্রাজ্যের বস্তুগত প্রক্রিয়াও ছিল মারাত্মক এবং সাম্রাজ্যের রাজনৈতিক মর্যাদার ক্ষুন্ন হয়ে ছিল অপরিসীম মোগল সম্রাট ঔরঙ্গজেবের রাজপুত নীতির ফলাফল। 


(৫) সাম্রাজ্যের স্তম্ভ সরু ছিল মহামতি আকবরের আমলে রাজপুতগণ। ভ্রান্ত নীতির দ্বারা মোগল সম্রাট ঔরঙ্গজেব রাজপুতগণদের শত্রুতে পরিণত করেন। 




👉 পরিশেষে মন্তব্য 

পরিশেষে মন্তব্য করা যায় যে, মুঘল সাম্রাজ্য প্রবল আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয় রাজপুতদের যুদ্ধের ফলে। রাজপুতানার মধ্য দিয়ে বাণিজ্য চলাচল বন্ধ হওয়ায় রাজকোষে বিপুল পরিমাণে অর্থের ঘাটতি পরে এবং মুঘল সাম্রাজ্যে রাজপুতানা থেকে রাজস্ব সংগ্রহ হ্রাস পায়। মুঘল সাম্রাজ্যের পতনকে ত্বরান্বিত করে এই রাজপুতানার আর্থিক সংকট।

............ সমাপ্তি...........


✍️লেখিকা পরিচিতি

Muntaha Yasmin
নাম- Muntaha Yasmin
ইউনিভার্সিটি - University of gour banga


📖তথ্যসূত্র

  1. Poonam Dalal Dahiya, "Ancient and Medieval India".
  2. Upinder Singh, "A History of Ancient and Early Medieval India: From the Stone Age to the 12th Century".

    📖সম্পর্কিত বিষয়

    সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আশাকরি আমাদের এই পোস্টটি আপনার ভালো লাগলো। আপনার যদি এই পোস্টটি সম্বন্ধে কোন প্রশ্ন থাকে, তাহলে নিচে কমেন্টের মাধ্যমে আমাদেরকে জানাতে পারেন এবং অবশ্যই পোস্টটি শেয়ার করে অপরকে জানতে সাহায্য করুন।

           ------------🙏---------------



    নবীনতর পূর্বতন
    👉 আমাদের WhatsApp Group- ক্লিক করুন 🙋‍♂️
    
        
      
      👉 আমাদের WhatsApp Channel- ক্লিক করুন 🙋‍♂️
      
    
    
      
    
       
    
        👉 আমাদের Facebook Group- ক্লিক করুন 🙋‍♂️
      
    
    
      
    
       
      
      
        👉 আমাদের Facebook Page-ক্লিক করুন 🙋‍♂️
    
    
        👉আমাদের YouTube চ্যানেল - সাবস্ক্রাইব করুন 👍 
    
    
    
    
        
      
    
      
    
    

    টেলিগ্রামে যোগ দিন ... পরিবারের সদস্য

    
    

    টেলিগ্রামে যোগ দিন ... পরিবারের সদস্য


     


     




    
    

    👉নীচের ভিডিওটি ক্লিক করে জেনে নিন আমাদের ওয়েবসাইটের ইতিহাস এবং বিভিন্ন চাকুরী সম্পর্কিত পরিসেবাগুলি 📽️

    
    
    

    👉 জেনে আপনি আমাদের প্রয়োজনীয় পরিসেবা 📖

    👉ক্লিক করুন 🌐