মনসবদারি প্রথা ছিল মুঘল সম্রাট আকবরের শাসন ব্যবস্থার অন্যতম এক বৈশিষ্ট্য। ১৫৭১ সালে মোঘল সম্রাট আকবর মনসবদারী প্রথা চালু করেন এবং জায়গিরদারি প্রথাকে বাতিল করে দেন। প্রায় ৬৬ রকমের মনসবদারদের পরিচয় পাওয়া যায় আকবর-ই-আকবরীতে। পদ মর্যাদা হল মনসব কথার অর্থ।
মুঘল সাম্রাজ্যের মানচিত্র, Source- (check here) |
✍️মনসবদারী প্রথার বৈশিষ্ট্য
মুঘল সম্রাট আকবরের মনসবদারি প্রথার অন্যতম বৈশিষ্ট্য গুলি নিচে আলোচনা করা হলো -
👉দশ হাজারি মনসবদার :- মুঘল সম্রাট আকবর নানা পথমর্যাদা বিশিষ্ট মনোযোগ দ্বারা নিয়োগ করেন।মনসবদারদের পরিচয় পাওয়া যায় দশ থেকে দশ হাজারে পদ মর্যাদা সম্পন্ন। মুঘল সম্রাটদের নিকট আত্মীয়গণ সাধারণত উচ্চ পদস্থ মনসবদারি পদ পেতেন।
👉নিম্ন ও উচ্চপদস্থ মনসবদার:- মুঘল সম্রাট আকবরের মনসবদারী প্রথার রেজিন্দর বলা হত নিম্নশ্রেণীর মনসবদের এবং মনসবদারী প্রথার ওমরা বলা হত উচ্চ পদস্থদের। মোগল সম্রাট আকবরের মনসবদারি প্রথার মধ্যে সাতহাজারী মনসবদার ছিলেন মান সিংহ।
👉জায়গির তনখা:- মোগল সম্রাট আকবরের মনোসবদার প্রথার জায়গীর তনখা ছিল। যে সমস্ত মনসবদার জায়গীর ভোগ করতেন তাদের বলা হতো তনখা জায়গীর।
👉জায়গির ওয়াতন:- মোগল সম্রাট আকবরের মনসবদারিপ্রথার মধ্যে একটি বংশপরম্পরা মূলক দায়িত্ব দেওয়া হতো। মোগল সম্রাট আকবরের মনসবদারি প্রথার বংশ পরম্পরা মূলক মনসবদারদের বলা ওয়াতন জায়গীর।
👉জাট ও সওয়ার :- জাট ও সওয়ার এই দুই ধরনের পথ ছিল ১৫৯৭ খ্রিস্টাব্দে মোগল সম্রাট আকবরের মনসবদারী প্রথার মধ্যে। সওয়ার পথ তিন প্রকার ছিল যথা -
- এক আপসা
- দুই আপসা
- শি আপসা। এছাড়া ছিল আমীর ও আমীর - ই - উমদি নামক মনসবদার।
👉মনসবদারদের ওপর নিয়ন্ত্রণ :- মুঘল সম্রাট আকবর তার ইচ্ছামতো মনসবদারদের নিয়োগ, বদলি, পদোন্নতি ও বরখাস্ত করতেন।
✍️ মন্তব্য
পরিশেষে বিশ্লেষণ করা যায় যে, মোগল সম্রাটদের সাম্রাজ্যে জায়গী দারি প্রথায় কিছু অসুবিধা দেখা দেওয়ায় মনসবদারী প্রথা চালু করেন মোগল সম্রাট আকবর। বিশাল মোগল সাম্রাজ্যের যুদ্ধের সময় ঠিক মত সৈন্য সরবরাহ করতো না ও সংগৃহীত অর্থ ঠিকমতো সরকারের কোশাগারে জমা দিত না। কিন্তু মোগল সম্রাট আকবর এর মনোসবদার প্রথার দায়িত্বে যারা ছিলেন তাদের ঠিক থাকবে বেতন দেওয়া হতো না। মনসবদারদের ঘোড়সাওয়ারকেই দেখাশোনা করার কথা ছিল ততজনকে যুদ্ধের সময় দেখাশোনা করত না। এইভাবে ধীরে ধীরে বিশাল মুঘল সাম্রাজ্যের অর্থনৈতিক ভীতি দুর্বল হয়ে পড়ে।
............ সমাপ্তি...........
✍️লেখিকা পরিচিতি
📖তথ্যসূত্র
- Poonam Dalal Dahiya, "Ancient and Medieval India".
- Upinder Singh, "A History of Ancient and Early Medieval India: From the Stone Age to the 12th Century".
📖সম্পর্কিত বিষয়
- আলাউদ্দিন খলজির অর্থনৈতিক সংস্কার (আরো পড়ুন)।
- দিল্লির সুলতানি রাষ্ট্রকে কি ধর্মাশ্রয়ী রাষ্ট্র বলা যায় (আরো পড়ুন)।
- মুঘল আমলে বাংলার সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থা (আরো পড়ুন)।
- 1707 থেকে 1740 সালের মধ্যে মুঘল রাজ দরবারে বিভিন্ন দলগুলির উন্নতি এবং তাদের রাজনীতি (আরো পড়ুন)।
- মুঘল আমলে সেচ ব্যবস্থা (আরো পড়ুন)।
সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আশাকরি আমাদের এই পোস্টটি আপনার ভালো লাগলো। আপনার যদি এই পোস্টটি সম্বন্ধে কোন প্রশ্ন থাকে, তাহলে নিচে কমেন্টের মাধ্যমে আমাদেরকে জানাতে পারেন এবং অবশ্যই পোস্টটি শেয়ার করে অপরকে জানতে সাহায্য করুন।
------------🙏---------------